আকাশ ইসলাম, মোংলা
অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি ও বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে আসা পর্যটকদের সহজে মন কাড়ে দিগন্ত জোড়া সবুজের সমরোহ। সেই সঙ্গে নীল আকাশের কোলে সাদা মেঘের ভেলা, দেহ-মন শীতল করা দখিনা বাতাস, রাতের গায়ে জোনাকির আলোয় আর সাগর পাড়ে তারার মেলা পর্যটকদের মনে দোলা দেয়। এছাড়া তটিনীর মৃদু ছন্দে কাব্যিক আবেশে মানসিক প্রশান্তির এক অবারিত দুয়ার খুলে দিয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র।
প্রকৃতির এই অপরূপ রাজকন্যা সুন্দরবনের যেদিকে তাকানো যায়, সে দিকেই যেন সুন্দরের শ্যামল মায়া। সবুজের সমরোহ আর সুন্দরবনের বুক চিরে বয়ে যাওয়া পশুর নদীর বুকে রূপালী চাঁদের আলোয় শুধু চোখই জুড়াবে না, এমনই আবেশে প্রকৃতির এ নান্দনিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাতছানি দেবে সুন্দরবন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর নৈসর্গিক লীলাভূমি অফুরন্ত সম্পদের চারণভূমি পৃথিবী শ্রেষ্ঠ ম্যানগ্রোভ সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে তালিকায় নিঃসন্দেহে সেরা।
একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র (ছবি: দৈনিক অধিকার)
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থানটির নামই হলো- করমজল ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্র। বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে ৩০ হেক্টর জমির ওপর পর্যটন কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। প্রকৃতির শোভা বাড়াতে এখানে রয়েছে কুমির, হরিণ, রেসাস বানরসহ নানা প্রজাতির পশুপাখি। এছাড়াও নির্মিত হয়েছে কাঠের ট্রেইল, টাওয়ার এবং জেলেদের মাছ ধরার কর্মযজ্ঞ দর্শন হচ্ছে অতিরিক্ত প্রাপ্তি।
সারা বছর ধরেই হাজারো পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত থাকে এ পর্যটন কেন্দ্রটি। করমজল পর্যটন কেন্দ্রে রাস্তার পাশে সাজানো থাকে বিভিন্ন অস্থায়ী দোকান। সেখানে পাওয়া যায় সাহেবি ক্যাপ, বানর, কুমিরের আকৃতির খেলনা, বিভিন্ন ধরনের খাবার ও মধু। রাস্তা ধরে একটু সামনে এগোলেই চোখে পড়বে বিশাল খোলা জায়গা খাঁচায় ঘেরা। যার ভেতরে রয়েছে অনেকগুলো চিত্রা হরিণ। অনেকের হাত থেকে বাদাম খাচ্ছে হরিণ।
একটু সামনে গেলেই চোখে পড়বে কুমিরের প্রজনন কেন্দ্র। কোনোটিতে ছোট ছোট কুমির, কোনোটা আবার মাঝারি। দেয়াল ঘেরা বড় পুকুরে রয়েছে বড় বড় কুমির। কুমিরের ডিম দিয়েও কুমির প্রজনন করা হয়। কুমির তিনটির নাম রোমিও, জুলিয়েট ও পিলপিল বলে জানালেন নিরাপত্তা দায়িত্বে থাকা একজন।
বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবনের পর্যটন খাতের উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে সরকার। অনেকগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তাছাড়াও সুন্দরবন ভ্রমণে দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সংখ্যা অনেকগুণ বেড়েছে। জাতীয় অর্থনীতিতেও দারুণ ভূমিকা রাখছে সুন্দরবনের ইকো ট্যুরিজম কেন্দ্রগুলো। তবে পর্যটক দর্শনার্থীদের আবাসনের সুবিধার্থে সুন্দরবনের কাছাকাছি উন্নত মানের হোটেল মোটেল নির্মাণ করা প্রয়োজন বলে জানান স্থানীয়রা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড