হারুন আনসারী, ফরিদপুর
নিত্যদিনের অসহনীয় যানজট নিরসনে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ফরিদপুর শহরে নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে ব্যাটারি চালিত রিকশা। সেই সঙ্গে শহরে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক চলাচলও সীমিত করা হবে। জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের সভাপতিত্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত গত কয়েকদিন ধরে এই সিদ্ধান্ত মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঘোষণার পর থেকে এ বিষয়ে এলাকায় বিভিন্ন মহল থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে। ফরিদপুর পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ইঞ্জিনচালিত রিকশার পাশাপাশি প্রায় পাঁচ হাজার ইজিবাইক ফরিদপুর পৌর এলাকায় চলাচল করে। ফলে ছুটির দিন বাদে প্রতিদিনই প্রধান সড়কসহ পাড়া মহল্লার রাস্তায়ও ভয়াবহ আকারের যানজট সৃষ্টি হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আপাতত দুভাগে তিন হাজার ইজিবাইকের লাইসেন্স দেওয়া হবে। একেক দিন একেক সিরিজের ইজিবাইক চলবে। সেই সঙ্গে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এদিকে জেলা প্রশাসনের এসব সিদ্ধান্তে যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত ঘটেছে হতদরিদ্র রিকশা চালকদের মাথায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন রিকশা চালক বলেন, প্রায় তিন হাজার ব্যাটারি চালিত রিকশা প্রতিদিন শহরে চলাচল করে। একেকটি রিকশার ওপরে একেকটি পরিবার নির্ভরশীল। এসব রিকশা না চললে এসব পরিবারের রুটি রুজির পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এ বিষয়ে ফরিদপুর রিকশা চালক শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছহের ব্যাপারি বলেন, প্যাডেলের রিকশা চেয়ে ইঞ্জিনের রিকশা অনেক ভারী করে বানানো হয়। ব্যাটারি খুলে ফেললে এই রিকশা পা দিয়ে চালানো যায় না। অনেকে ধার-দেনা করে সহায় সম্পদ বিক্রি করে উপার্জনের অবলম্বন হিসেবে এসব রিকশা কিনেছেন। শুধুমাত্র এসব রিকশাই যে যানজটের কারণ তা নয়। আমরা এ নিয়ে প্রয়োজনে আমাদের সংসদ সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে কথা বলব।
ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইকের কারণে জানজটে নাকাল ফরিদপুর শহর (ছবি: দৈনিক অধিকার)
ফরিদপুর ইজিবাইক চালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শহীদ মোল্লা অবশ্য লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ইজিবাইকগুলোকে লাইসেন্স প্রদান করা হলে এ খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
এদিকে ফরিদপুরের প্রবীণ সাংবাদিক আহম্মদ ফিরোজ বলেন, সুশাসনের অভাবেই শহরে যানজট হচ্ছে। সড়কে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং ও ফুটপাত দখল করে দোকান বসানো এবং নির্মাণ সামগ্রী ফেলে সড়ক সংকোচন করে রাখার ফলে জানজট বাড়ছে। এছাড়াও শহরের মধ্যে হাট-বাজার বসছে। প্রশাসনের এসব দিকে নজর দেওয়া উচিত। এভাবে ইঞ্জিনচালিত রিকশা চলাচল বন্ধ হলে অনেকে বেকার হয়ে যাবে। ফলে এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও অন্যান্য অপরাধ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
ফরিদপুর পৌরসভার মেয়র শেখ মাহতাব আলী মেথু বলেন, জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভার মাধ্যমে তার ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা যেকোনো মূল্যে পালন করতে বদ্ধপরিকর। এখানে পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ফরিদপুর পৌরসভায় ব্যাটারি চালিত রিকশা ও ইজিবাইকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় শহরটি যানজটের কবলে পড়েছে। রাস্তায় পা ফেলা পর্যন্ত যায় না। পৌরমেয়র হিসেবে এ অবস্থা তার পক্ষে মেনে নেওয়া কষ্টকর।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড