আব্দুর রশিদ শাহ, নীলফামারী
নীলফামারী সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেড়েই চলছে কুকুরের উপদ্রব। কুকুরের দাপটে পথচারী বৃদ্ধসহ স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পড়েছে মহাবিপাকে।
জানা যায়, নীলফামারী সদর হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কুকুর ও বিড়ালের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে আসা ২৫০-৩০০ রোগীকে বিনা মূল্যে ভ্যাকসিন (টিকা) দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
সদর আধুনিক হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও ভ্যাকসিনেটর নাজমা পারভীন বলেন, বিড়াল ও কুকুরে কামড়ে কোনো কোনো দিন প্রায় ৪০০ রোগীকে রেভিস ভ্যাকসিন (টিকা) ও রেভিস আইজি (টিকা) দিতে হয়। তিনি বলেন, কুকুর নিধনে ব্যবস্থা না থাকায় এমনটি হচ্ছে। গত দুই বছরে এর পরিসংখ্যান ছিল ১০০-১৫০ রোগী।
সদর আধুনিক হাসপাতালে টিকা নিতে আসা জেলার জলঢাকা উপজেলার বগুলাগাড়ী ইউনিয়নের বগুলাগাড়ী গ্রামের মৃত্যু মফেল উদ্দিনের মেয়ে ও জলঢাকা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী নিলিমা আক্তার (১৪) বলেন, ‘বাড়ি থেকে বিদ্যালয় যাওয়ার পথে হঠাৎ একটি কুকুর এসে কামড় দেয়। এই ক্ষত শুকাতে গিয়ে আমি ১৫ দিন স্কুলে যেতে পারিনি। কুকুরের উপদ্রব এতই বেড়েছে অন্যান্য বান্ধবীরা এই ভয়ে কয়েকদিন স্কুলে আসেনি।’
জেলা সদরের দারোয়ানী সুতাকল এলাকার আব্দুল হাকিম (৪০) কুকুরের কামড় খেয়ে হাসপাতালে টিকা দিতে আসে। সেখানে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, বিকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে দারোয়ানী বাজারে আসার পথে কুকুরের দল থেকে হঠাৎ একটি কুকুর তেড়ে এসে পায়ে কামড় দেয়। এ রকম ঘটনা এলাকায় প্রতিদিন ঘটছে। এর কোনো প্রতিকার নেই বলে প্রশ্ন করেন তিনি। এখন কুকুরের অত্যাচারে অতিষ্ঠ পথচারী।
জেলার সৈয়দপুর পৌরসভার বাবু পাড়া মহল্লার মাসুম মিয়ার মেয়ে মিম আকতার (১০) বলেন, বাড়ির পাশে দুই বান্ধবী মিলে খেলাধুলা করতেছি, এ সময় একটি কুকুর দৌড়ে এসে পায়ে কামড় দেয়।
এ ব্যাপারে, নীলফামারী পৌরসভার সচিব মো. মশিউর রহমান বলেন, সরকারি নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত কুকুর নিধনে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। এর আগে সরকারিভাবে ঢাকার মহাখালী থেকে একটি টিম এসে কুকুর নিধন করত। তারা কুকুর প্রতি ৪০ টাকা করে নিত। এরপর পরিবেশবাদী নামের একটি সংস্থা উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করলে আদালত তা আমলে নিয়ে কুকুর নিধন বন্ধ করে দেয়।
এ ব্যাপারে, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোনাক্কা আলী দৈনিক অধিকারকে বলেন, কুকুরের টিকা (জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা) জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। আমরা শুধু টেকনিক্যাল সার্পোট (কারিগরি সহায়তা) দিয়ে থাকি। তবে কেন কুকুরের জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা বন্ধ আছে তা আমি বলতে পারব না।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন ডা. রনজিৎ কুমার বর্মন দৈনিক অধিকারকে বলেন, সরকারি নির্দেশে কুকুর মারা ও প্রতিষেধক ভ্যাকসিন (টিকা) সরবারহ বন্ধ আছে। তবে কুকুরের কামড়ে আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণ রেভিস ভ্যাকসিন আছে। ভ্যাকসিন সংকটের কোনো কারণ নাই।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড