শাহারিয়ার রহমান রকি, ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক (ডিএডি) নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে কর্মচারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, বিভিন্ন স্টেশন থেকে মাসিক অর্থ আদায়, সরকারি দপ্তরে চিঠি ইসু নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এতে ফায়ার স্টেশনগুলোর স্টেশন অফিসার থেকে শুরু করে ফায়ার ম্যানরা পর্যন্ত অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন।
জানা যায়, গত ৭ জুলাই নিজাম উদ্দিন উপ-সহকারী পরিচালক হিসাবে ঝিনাইদহে যোগদান করেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন স্টেশনে ফোন দিয়ে মাসিক মোটা অংকের টাকা দাবি করে আসছেন। সেই সঙ্গে স্টেশনগুলোর অগ্নিনির্বাপণ গাড়ির টার্ন আউটের ওপর ভিত্তি করে জ্বালানি উত্তোলনের অনুমোদনের সময় তিনি ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ, কোটচাদপুর, মহেশপুর ও হরিনাকুন্ডু স্টেশনে ৩ হাজার থেকে শুরু করে ১৫ হাজার টাকা চান। গত আগস্ট মাসের শুরুতে এবং চলতি মাসে বেশ কয়েকটি স্টেশন এই টাকা পরিশোধও করেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সূত্রে জানা যায়, উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অনিয়ম, প্রমোশন সংক্রান্ত বিষয়ে সচিবালয়ে দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগে ইতোপূর্বে দুটি বিভাগীয় মামলা হয়েছিল এবং সম্প্রতি আরও একটি মামলা হয়েছে।
ঝিনাইদহে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন (ছবি: দৈনিক অধিকার) ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা আনসার ভিডিপি প্রশিক্ষক আসাদুর রহমান জানান, গত মাসে আমাদের আনসার সদস্যদের পিডিটি ওয়ার্ড প্লাটুন প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণে ফায়ার সার্ভিসের একটি অংশ ছিল। এই অংশের জন্য আমরা উপজেলা স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদকে চিঠি ইস্যু করি। এরপরেই ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন আমাকের ফোন দিয়ে বলে আপনি উপজেলাতে কেন চিঠি ইস্যু করেছেন। আমাকে চিঠি দেবেন আমি প্রশিক্ষণ করাব।
আনসার কর্মকর্তা আরও বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। একজন দায়িত্বশীল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ফোন দিয়ে আমাকে এমন কথা বলবেন এটি আশা করিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা জানান, নতুন যোগদান করা ডিএডি নিজাম উদ্দিন স্যার আমাদের অতিষ্ট করে ফেলছেন। আমাদের কাছেও মাসিক টাকা দাবি করছেন। আমরা আসলে টাকাটা তাকে কোথা থেকে দেব। এটা বলার পরেও জ্বালানি উত্তোলনের অনুমোদন নিতে গেলে টাকা দিতে হচ্ছে। এতে আমাদের স্টেশন চালানো খরচও থাকছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ফায়ারম্যান জানান, ডিএডি স্যার আমাদের সঙ্গে সব সময় ধমকের সুরে কথা বলেন। এতে খুব খারাপ লাগে। আমরা ফায়ারম্যান বলে কি তিনি এমন আচরণ করবেন?
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে ঝিনাইদহ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক নিজাম উদ্দিন বলেন, আমার চাকরি জীবনে এখন পর্যন্ত এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। স্টেশনে টাকা চাওয়া কিংবা খারাপ আচরণের বিষয়ে আপনাদের কাছে যারা অভিযোগ দিয়েছে সেগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহের দায়িত্বে থাকা যশোর ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক মতিয়ার রহমান জানান, স্টেশন থেকে টাকা নিয়ে থাকলে কিংবা টাকা দাবি করলে এটা অবশ্যই অপরাধ। সেবামূলক এই ফায়ার সার্ভিসে এমন কোনো বিধান নেই যে ডিএডিকে টাকা দিতে হবে। তাছাড়া কোনো ফায়ার প্রশিক্ষণের জন্য ডিএডিকে চিঠি ইস্যু করার কোনো বিধান নেই। উপজেলার প্রশিক্ষণের জন্য উপজেলা স্টেশন অফিসারকেই চিঠি ইস্যু করতে হবে। তবে এসব অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন বলে জানান তিনি।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড