এবার মসজিদ কমিটির পদেও ভোটের লড়াই

দেশের রয়েছে হাজারো রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন। এসব সংগঠনের বেশির কমিটিই হয় সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে। এতদিন দেশের অন্যতম প্রধান ধর্মভিত্তিক সংগঠন মসজিদ কমিটি নির্বাচনে কোথাও ভোটের লড়াইয়ে নামার কথা শোনা যায়নি। তবে এবার মসজিদ কমিটিতে স্থান পেতে ভোটের লড়াইয়ে নামতে দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার একটি মহল্লায়।

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ২২ নম্বর ওয়ার্ডে আমিন আবাসিক এলাকায় ৫ নম্বর রোডে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে ছবিসংবলিত রঙ-বেরঙের ব্যানার, রাস্তার দুই পাশের বাসা-বাড়িগুলোর দেয়ালে লাগানো হয়েছে পোস্টার, বিতরণ করা হচ্ছে লিফলেট। মসজিদ কমিটিতে স্থান পেতে দুটি প্যানেলে বিভক্ত প্রার্থীরা ভোট চাইছেন এলাকাবাসীর কাছে।

জানা গেছে, আল-আমিন জামে মসজিদ ও পঞ্চায়েত কমিটিতে দুটি প্যানেলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। মসজিদটিতে ভোটার রয়েছে ২১৯ জন। প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন বন্দর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন সমবায় অফিসার।

একটি প্যানেলে সভাপতি প্রার্থী হয়েছেন- হাজী মোজাম্মেল হক, সহ-সভাপতি আশরাফ উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক পদে লুৎফর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুব-আর-রশিদ ও কোষাধ্যক্ষ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম সরকার। প্রতিদ্বন্দ্বী প্যানেলে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন- মো. আব্দুল কাইউম, সহ-সভাপতি পদে মো. জিয়াউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক পদে মো. শাহজাহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে কাজী মোহাম্মদ আলী ও কোষাধ্যক্ষ পদে লড়ছেন হাজী আমজাদ হোসেন।

আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার মসজিদটিতে হতে যাচ্ছে ভোট গ্রহণ। তবে স্থানীয়রা এ নির্বাচনকে ভালো চোখ দেখছেন না। এলাকাবাসীর দাবি, ইতিপূর্বে মহল্লার মুরুব্বি, নামাজি, পরহেজগার ও গণ্যমান্যদের পরামর্শের ভিত্তিতে গঠন হয়ে আসছে মসজিদ কমিটিগুলো। এবারই ব্যতিক্রম। এই পদ্ধতিতে নির্বাচন হওয়ায় ইতোমধ্যেই অর্থের অপচয়, দলাদলির সৃষ্টি ও কোন্দল বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি পরস্পর শত্রুতার স্থায়ী বীজ বপন হচ্ছে।

মসজিদটির নির্বাচনটি নিয়ে একজন মুসল্লি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আল্লাহর ঘরের খেদমত ও মুসল্লিদের খেদমত তো নয়ই বরং সামাজিক পদমর্যাদা বৃদ্ধির জন্য এভাবে মসজিদ কমিটির নির্বাচন হচ্ছে। এটা নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া আর কিছু নয়।

ভোটের মাধ্যমে নির্বাচনের কারণ জানতে চাইলে মসজিদের সভাপতি পদপ্রার্থী মোজাম্মেল হক বলেন, ২০১০ সাল থেকে মসজিদ কমিটির বিভিন্ন পদ দখল করে আছে শাহজাহানরা। যোগ্যতা ও সৎ ইচ্ছা না থাকলেও বারবার নিজেদের নিজ নিজ পদে বহাল রেখে তারা কমিটি গঠন করতেন। আমরা বিষয়টির প্রতিবাদ করে নানাভাবে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু তারা না মানায় আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিকে জানাই। পরে বাড়ির মালিক, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, পুলিশ ও প্রশাসন নিয়ে বসা হলেও সিদ্ধান্ত তারা মানেনি। তাই আমরাও ছাড় দেব না। এ কারণে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে বাধ্য হয়েছি।

ওডি/ এফইউ