• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কী দোষ ছিল ১২ দিনের শিশুর?

  সহিদুল ইসলাম সহিদ, কিশোরগঞ্জ

০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:০১
নবজাতক
কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে যাওয়া নবজাতক (ছবি: দৈনিক অধিকার)

সবার মুখে একটাই প্রশ্ন, ‘কী দোষ ছিল ১২ দিনের ফুটফুটে নিষ্পাপ এই শিশুটির? মুখ খুলে যে কিছু বলত দূরের কথা, যে এখনো চোখ মেলে দুনিয়ার আলো দেখতে শেখেনি। কিন্তু জন্মের পর পরই তাকে নির্মমতার শিকার হতে হলো।’

ঠিক এই কথাগুলো বলছিলেন হাসপাতালের সিঁড়িতে ফেলে যাওয়া শিশুটিকে দেখতে আসা লোকজন। তবে নার্স, ডাক্তার ও অন্য মানুষের ভালোবাসায় প্রাণে বেঁচে আছে ভাগ্য বিড়ম্বনার শিকার সেই শিশুটি।

কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা মো. লোকমান হোসেন বলেন, কেমন মা আর কেমন মানুষ আত্মীয়-স্বজন, মাত্র ১২ দিনের শিশুটিকে এভাবে সিঁড়িতে রেখে অন্ধকার জীবনে ফেলে যায়। যে সময়টা মায়ের কোলে পরম মমতায় হেসে-খেলে সময় কাটানোর কথা থাকলেও এখন হাসপাতালের প্রতিকূল পরিবেশে থাকতে হচ্ছে নিষ্পাপ শিশুটিকে।

জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট বিকালে কিশোরগঞ্জের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিঁড়িতে ওই নবজাতককে পাওয়া যায়। কে বা কারা কখন ফেলে গেছে তা হাসপাতালের কেউ কিছু বলতে পারছেন না। আনুমানিক ১২/১৩ দিনের এ ছেলে শিশুটিকে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ডাক্তার আর নার্সদের আন্তরিক চিকিৎসা আর সেবায় সুস্থ হয়েছে উঠেছে শিশুটি। ইতোমধ্যে শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন কয়েকজন।

হাসপাতালের নার্স আর আয়াদের পরম মমতায় বেড়ে উঠছে শিশুটি (ছবি: দৈনিক অধিকার)

এ দিকে জন্মের পরই নির্মমতার শিকার শিশুটিকে কারও কাছে দত্তক দেওয়া হবে, না কি তাকে ঢাকার শিশু নিবাসে পাঠানো হবে তার নির্দেশনা চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে সমাজ সেবা অধিদপ্তর।

হাসপাতাল ও রোগী নিয়ে আসা অভিবাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় সিঁড়ির ওপর নবজাতক শিশুটিকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়ার থেকে তার সময় কাটছে হাসপাতালে। হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে নার্স আর আয়াদের পরম মমতায় আস্তে অস্তে মুখে হাসি ফুটছে শিশুটির মুখে। ফেলে যাওয়ার শিশুটির কোনো অভিবাবক এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে শিশুটি বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ আছে। কোনো অভিভাবক না থাকায় সমাজ সেবা বিভাগের তত্ত্বাবধানে তাকে নবজাতক ওয়ার্ডে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া জানান, শিশুটিকে আমরা সার্বক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা নজরদারিতে রেখেছি। শিশুর বিষয়টি পুলিশ ও সমাজ সেবা বিভাগকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়েছে।

জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক কামরুজ্জামান খান জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চিঠি পাওয়ার পর শিশুটিকে দত্তক দেওয়া কিংবা ঢাকার শিশুমণি নিবাসে পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পেতে সোমবার কিশোরগঞ্জের ১ নম্বর আমলি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের সিদ্ধান্ত পেলেই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড