• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে আছে নামমাত্র সেবা

  আল মামুন জীবন, ঠাকুরগাঁও

০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৪:৪৫
ঠাকুরগাঁও
মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ঠাকুরগাঁও (ছবি : দৈনিক অধিকার)

এখন আর হয়না গর্ভবতী মায়ের জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন। কারানো হয় না স্বাভাবিক প্রসবও। প্রায় ২ বছর ধরে এমন চিত্র চিত্র ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের। চিকিৎসক না থাকায় গর্ভবতী মায়েরা তাদের কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

প্রতিদিন এই কেন্দ্রে এসে সেবা না পেয়ে দালালদের খপ্পরে পড়ে পাশের বিভিন্ন ক্লিনিকে গিয়ে সিজার করতে হচ্ছে গর্ভবতীদের মায়েদের। এতে অতিরিক্ত খরচের পাশাপাশি নানা সমস্যার সম্মুখীন পড়তে হচ্ছে তাদের। অনেক সময় ভুল ডাক্তারের খপ্পরে পড়ে প্রাণ হারাতে হচ্ছে গর্ভবতী মা ও শিশুকে। শুধুমাত্র মায়েদের চেকআপ, শিশুদের টিকা দেওয়া ছাড়া আর কোনো সেবা দেওয়া হয়না ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে।

স্থায়ী স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রটিতে যোগদান করা চিকিৎসক প্রশিক্ষণের জন্য ঢাকায় গেছেন। প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হলে এই সংকট কেটে যাবে বলে ধারণা করছেন তারা।

ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ডা. নাসিমা আক্তার জাহান ২০১৭ সালের পদোন্নতি পেয়ে বদলী হন উক্ত কেন্দ্র থেকে। এর পর থেকে সংকটে পড়ে এই কেন্দ্রটি। প্রায় বন্ধ হয়ে যায় জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম। পদোন্নতি পাওয়া ডা. নাসিমা আক্তার মাঝে মধ্যেই অতিরিক্ত সেবা দিতে আসেন এই কেন্দ্রটিতে। তবে তিনি আসেন শুধু মানবিক বিবেচনায়। এই কেন্দ্রটিতে তিনি দায়িত্ব থাকা অবস্থায় জটিল গর্ভবতী মায়েরা যে ধরনের সেবা পেত তা এখন পান না বললেই চলে। তবে আশার আলো এ বছরের জুন মাসে ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে মেডিকেল অফিসার ক্লিনিক পদে জামিনি বসাক যোগদান করেন। কিন্তু তিনি এক বছরের প্রশিক্ষণে যান ঢাকায়। ফলে গর্ভবতী মায়েরা জটিল ও সিজারিয়ান সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

বর্তমানে প্রতিদিন ৫০ জন গর্ভবতী মাসহ শতাধিক মা ও শিশু চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন এখানে। জটিল প্রসব, স্বাভাবিক প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় এই কেন্দ্রের ২০টি বেডই থাকে ফাঁকা রয়েছে।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রটিতে ২০১২ সালের জুলাই থেকে ১৩ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ৩৪৭ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৬৭৪ জনের। ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ১৪ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ৩৫৮ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৬১৬ জনের। ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ১৫ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ৫৮৮ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৮৮০ জনের। ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ১৬ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ৪৬৫ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৮৯০ জনের।

২০১৬ সালের জুলাই থেকে ১৭ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ১৭০ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৬৪৬ জনের এবং ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ১৮ সালের জুন পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ১৪৯ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৫৪৭ জনের।

আর এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত জটিল প্রসব ও সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে ৭২ জনের, আর স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে ৩০৩ জনের। ওই হিসাবে দিন দিন সেবা কমে যাচ্ছে এ কেন্দ্র থেকে।

ঠাকুরগাঁও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. রেজা হাবিব জানান, বর্তমানে এমও ক্লিনিক পদে যোগদান করা ডা. জামিনি বসাকের এক বছরের প্রশিক্ষণ শেষে ফিরে এলে আবারও গর্ভবতী মায়েরা সব ধরনের সেবা পাবেন।

ওডি/এমবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড