• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

টাঙ্গাইলের কেন্দ্রীয় পয়ঃনিষ্কাশন নালাটি যেন মশার প্রজনন কেন্দ্র

  ফরিদ মিয়া, টাঙ্গাইল

৩১ আগস্ট ২০১৯, ১৯:১৬
নালা
জমে থাকা পানি আর ময়লা-আবর্জনায় নালাটি পরিণত হয়েছে মশার প্রজনন কেন্দ্রে (ছবি : দৈনিক অধিকার)

টাঙ্গাইলের কেন্দ্রীয় পয়ঃনিষ্কাশন নালাটি মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত পরিষ্কার না করায় টাঙ্গাইল শহরের পয়ঃনিষ্কাশনের প্রধান এই নালাটি (সেন্ট্রাল ড্রেন) ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। ফলে জমে থাকা পানি ও বর্জ্যরে স্তূপের কারণে এটি বর্তমানে মশার বংশ বিস্তারের অন্যতম প্রধান উৎস।

পৌর কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে ময়লা-আবর্জনা অপসারণ না করায় জনস্বাস্থ্যের হুমকির পাশাপাশি নালাটি পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দিকে, শহরবাসীর অভিযোগ, এই ময়লার স্তূপ থেকে এডিস মশার বংশ বিস্তার ঘটতে পারে। তারপরও এটি পরিষ্কারে কোনো উদ্যোগ নেই পৌর কর্তৃপক্ষের।

শনিবার (৩১ আগস্ট) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ নালাটি ময়লা ও পলিথিনসহ বিভিন্ন ধরনের আবর্জনায় ভরে আছে। পার্কবাজার, নিরালারমোড় ও শহরের তিনটি হোটেলের ফেলা এ বর্জ্য থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এ সময় ময়লা আবর্জনার মধ্যে জমে থাকা পানিতে মশার লার্ভাও দেখা যায়। পুরো নালাটিই এখন যেন মশক প্রজননস্থলে পরিণত হয়েছে।

এ দিকে, পাকা নালা তৈরি করার পর নালার বিভিন্ন অংশের উপর পৌরসভা কর্তৃক দোকান নির্মিত হয়েছে। ফলে দোকানের নিচের অংশে আবর্জনার স্তূপ হলেও সহজেই এগুলো পরিষ্কার করা যায় না। জানা যায়, নালাটি নির্মাণের পর দুইবার এটি পরিষ্কার করেছে পৌরসভা। সর্বশেষ ২০১৪ সালে এটি পরিষ্কার করা হয়। এরপর বিগত পাঁচ বছরে আর এটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

অপরদিকে, পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, নালাটি পরিষ্কার করতে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকা খরচ হবে।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পৌর এলাকার প্যাড়াড়াইস পাড়ার সাব্বির জানান, দীর্ঘদিন হলো নালাটি পরিষ্কার করা হয় না। বৃষ্টি হলে নালার বর্জ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। এতে এলাকায় থাকাই দায় হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের জোর দাবি যত দ্রুত সম্ভব এই নালাটি পরিষ্কার করা হোক।

ভিক্টোরিয়া রোডের ব্যবসায়ী কাজী কাশেম মিয়া জানান, এই নালা থেকে নানা রোগ-জীবাণু ছড়াচ্ছে। বর্তমানে এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

টাঙ্গাইল নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব মীর মেহেদী জানান, নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এটি শহরবাসীর বড় দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নালাটি দেখে মনে হয়, এটি যেন মশা উৎপাদনের অভয়ারণ্য।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) টাঙ্গাইল অঞ্চলের জ্যেষ্ঠ গবেষণা কর্মকর্তা সোমনাথ লাহিড়ী জানান, নিয়মিত পরিষ্কার না করায় নালাটি জনস্বাস্থ্যের জন্য শতভাগ হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই দ্রুত এটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় নালাটি ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে এটি ঠিক। খুব দ্রুত নালাটি পরিষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নালার মধ্যে ময়লা-আবর্জনা যাতে না ফেলা হয় সে জন্য পৌর নাগরিকদেরও সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ব্রিটিশ আমলে শহরের পশ্চিমে অবস্থিত প্যাড়াডাইস পাড়ায় লৌহজং নদী থেকে একটি খাল খনন করে ভিক্টোরিয়া রোডের পাশ দিয়ে শহরের পশ্চিম প্রান্তে বুড়াই বিল পর্যন্ত নেওয়া হয়। মূলত এ খালটি শহরের পানি ও পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য খনন করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সালে এ খালটিকে দুই মিটার প্রশস্ত পাকা নালায় পরিণত করা হয়। যা বর্তমানে কেন্দ্রীয় নালা হিসেবে পরিচিত।

ওডি/আইএইচএন

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড