• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ঈশ্বরদীতে খোলা মাঠে পড়ে আছে এক লাখ বস্তা সার

  ঈশ্বরদী প্রতিনিধি, পাবনা

৩০ আগস্ট ২০১৯, ০৮:২৬
সার
ত্রিপল ঢাকা ইউরিয়া সার (ছবি : দৈনিক অধিকার)

ঈশ্বরদীতে দীর্ঘ সাড়ে চার বছর ধরে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় খোলা মাঠে পড়ে আছে প্রায় এক লাখ বস্তা ইউরিয়া সার। উপজেলার পাকশী নর্থবেঙ্গল পেপার মিলসের মাঠে ডাম্পিং করে রাখা হয়েছে বিদেশ থেকে আমদানি করা এসব সার। যার মূল্য ১০ কোটি টাকা।

বৃষ্টির পানি ও বাতাসে জমাটবাঁধা এই সার প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে পাওয়ার ক্রাশারে গুঁড়ো করে নতুন বস্তায় ভরে (রি-ব্যাগিং করে) ডিলারদের দেওয়ার জন্য দুই দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। ফলে সারের বস্তাগুলো আবারও বৃষ্টির পানিতে ভিজে জমাট বেঁধে যাচ্ছে। এতে কমে যাচ্ছে সারের গুণগত মান।

বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে ইউরিয়া সার বিতরণের জন্য বিসিআইসির নির্ধারিত ট্রানজিট গোডাউন (টিজি) ঈশ্বরদীর পাকশী নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, বিসিআইসি এই মিলটি দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকদের ইউরিয়া সারের চাহিদা মেটানোর জন্য ট্রানজিট গোডাউন হিসেবে ব্যবহার করছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, দক্ষিণ কোরিয়া ও চীন থেকে আমদানি করা এসব ইউরিয়া সার রাজশাহী ও নাটোরের বাফার এবং পাবনায় পাকশীর এনবিপিএম ট্রানজিট গোডাউনে রাখা হয়।

সূত্র জানায়, বর্তমানে এই গোডাউনে প্রায় সাত লাখ ৪০ হাজার বস্তা সার রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক লাখ বস্তা সার খোলা আকাশের নিচে ত্রিপল দিয়ে ডাম্পিং করে রাখা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিজি গোডাউনের কয়েকজন ডিলার জানান, খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘদিন ধরে ডাম্পিং করে রাখায় ইউরিয়া সারের গুণগত মান কমে গেছে। ইউরিয়া সারে নাইট্রোজেনের স্বাভাবিক পরিমাণ থাকে ৪৬ শতাংশ। কিন্তু এই সারের নাইট্রোজেনের পরিমাণ ২২-২৫ শতাংশে নেমে এসেছে। ফলে ফসল উৎপাদনে স্বাভাবিক সুবিধা পেতে কৃষকদের এই সার দ্বিগুণ পরিমাণে ব্যবহার করতে হবে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি ফসলে সার প্রয়োগের উদ্দেশ্যও ব্যর্থ হবে। এ জন্য সার উত্তোলনের আদেশ বাতিল করাতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

পাকশীর টিজি উপব্যবস্থাপক (বিক্রয়) ইকবাল আমিন রতন বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ডাম্পিং করে রাখায় সারগুলো জমাট বেঁধে গেছে। সেগুলো বিসিআইসির নির্দেশে পাওয়ার ক্রাশারে ভেঙে রি-ব্যাগিং করা হয়েছে। এরপর টিজি গোডাউনের নির্ধারিত ডিলারদের সার উত্তোলনের জন্য বিসিআইসি থেকে দুই দফা চিঠি এসেছে। কিন্তু সারের মান কমে গেছে দাবি করে ডিলাররা সার উত্তোলনের আদেশ বাতিল করিয়েছেন। এ কারণে সারের বস্তাগুলো আগের মতোই ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বিসিআইসির ব্যাপক লোকসান গুণতে হবে।’

তিনি বলেন, গত কয়েক দিন আগে বিসিআইসি থেকে সার উত্তোলনের জন্য নির্ধারিত ডিলার ও বিআরবি গ্রুপের কাছে আদেশপত্র পাঠানো হয়েছে। এখনো তাদের পক্ষ থেকে সার উত্তোলন করা হয়নি। তবে এবার তারা সার উত্তোলন করবেন বলে আশাবাদী এই কর্মকর্তা।

এ দিকে কৃষকদের ফসলের জন্য প্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার এভাবে নষ্ট হওয়ার দৃশ্য দেখে অনেকে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সফল চাষি মুরাদ মালিথা বলেন, কৃষকদের ব্যাপারে সরকারের সদিচ্ছা কিছু অসৎ আমলার ভুল সিদ্ধান্তের কারণে নষ্ট হচ্ছে।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড