নাটোর প্রতিনিধি
আদালতে মামলা থাকা সত্বেও শহরের পটুয়াপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলাম ছোটনের বাড়ি ভাঙচুর করে দখল নেওয়ার অভিযোগে নাটোর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি অপূর্ব চক্রবর্তী এবং তার অপর দুই সহোদরের নাম উল্লেখ করে শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজুল ইসলাম ছোটন।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে নাটোরের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করেন তিনি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে নাটোর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী সিরাজুল ইসলাম পৌরসভার পটুয়াপাড়ার মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামি অপূর্ব চক্রবর্তী সিরাজুল ইসলামের বাসার পাশের একটি জায়গা কিনে তার বাসাবাড়ি ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র শুরু করে। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে বাদী জেলা জজ আদালতে চিরস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে মামলা করেন। মামলার বিষয় জানার পর আসামিরা আদালতে না গিয়ে মেয়রের শরণাপন্ন হন। তাদের সঙ্গে মেয়রের সখ্যতা থাকায় মেয়র শতাধিক লোকজন নিয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে প্রাচীর ভাঙার নির্দেশ দিয়ে চলে যান। এ সময় বাদী কাগজপত্র দেখাতে চাইলেও তিনি তা দেখেননি এমনকি মামলার বিষয়টিও আমলে নেননি।
বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেন, আসামিরা ক্ষমতাধর প্রভাবশালী হওয়ায় দিনে দুপুরে প্রাচীর ও রান্না ঘর ভেঙে দখলে নেয়। এ সময় বাধা দিতে গেলে হত্যার হুমকি দেন তারা। পরে বাসায় আশ্রয় নিয়ে আত্মরক্ষা করেন বাদী পক্ষ। এছাড়া আসামি পক্ষ রান্না ঘরের টিন ট্রাক যোগে নিয়ে চলে যান।
এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও থানা আসামিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অপারগতা জানায়। পরে বাদী মঙ্গলবার আদালতের শরণাপন্ন হয়ে মামলা করলে আদালত ওসিকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেন।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট সিরাজুল ইসলাম ছোটনের বাড়ি ভাঙচুর করে প্রতিপক্ষকে দখল বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে নাটোর পৌরসভার মেয়রের বিরুদ্ধে সম্মেলন করেন।
নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিরাজুল ইসলাম ছোটন লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রায় ৩০ বছর পূর্বে সুকুমার মন্ডল নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ছয় শতাংশ এবং তার ভায়রা সামসুল হুদা ১৯ শতাংশ জমি কিনে বাড়ি বানিয়ে বসবাস করছিলেন। পরবর্তীতে সামসুল হুদা তার অংশের জমি অচিন্ত কুমার চক্রবর্তী ও বিউটি ভৌমিকের কাছে বিক্রয় করেন।
গত ১০ জুলাই নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে সিরাজুল ইসলাম ছোটন দুই ফিট পাঁচ ইঞ্চি করে জমি সীমানা প্রাচীর দিয়ে দখল এবং নিজ উদ্যোগে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে সিরাজুল ইসলাম ছোটন আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এরপর গত ২৪ আগস্ট মেয়রের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নেতা অপূর্ব চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে অচিন্ত চক্রবর্তী ও বিউটি ভৌমিকের লোকজন সিরাজুল ইসলাম ছোটনের বাড়ির পানির লাইন, সুয়ারেজ লাইন ও বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙে জায়গা দখল করে নতুন করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েও তিনি প্রতিকার পাননি বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড