রূপসা প্রতিনিধি, খুলনা
খুলনার রূপসা উপজেলার আলাইপুর থেকে ভবানীপুর সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে৷ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষ। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা, দায়িত্বহীনতা, খামখেয়ালীপনা এবং সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে নির্ধারিত সময়ে সড়ক নির্মাণ কাজ না হওয়ার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলায় থাকার পর সাড়ে চার কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে। সে মোতাবেক ২৭ আগস্ট সড়কের কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নির্লিপ্ততা ও নানামুখী অজুহাতের কারণে সড়কের কাজ এখনও এক চতুর্থাংশ সম্পন্ন হয়নি। জানা গেছে, সাড়ে চার কিলোমিটার এ সড়কের নির্মাণ ব্যয় তিন কোটি ৮৮ লাখ ৭২ হাজার ১০৩ টাকা।
সরেজমিনে সড়কটিতে গিয়ে অভিযোগ মতে জানা যায়, সড়কটি ৩ দশমিক ৭ মিটার চওড়া এবং ১২ ইঞ্চি মাটি খুড়ে নতুন করে বালু দিয়ে সড়কের কাজ শুরু করার কথা থাকলেও কাজের শুরুতেই দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
সড়কের তলদেশ ১২ ইঞ্চি খোঁড়ার পর রুলার করার কথা থাকলেও সামান্য খোঁড়াখুঁড়ি করে রুলার না করে ধুলাবালির পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে নদীর পলি মিশ্রিত বালু ওই রাস্তায় আনা হয়। আর এ কারণে প্রবল বর্ষণে সড়কের অবস্থা হয়েছে কর্দমাক্ত এবং ওই সড়কে অর্ধ শতাধিক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। হ্যাজিং এ ব্যবহৃত ইটের মান সন্তোষজনক নয় এবং বর্তমানে উক্ত সড়ক দিয়ে যান চলাচল একেবারেই বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে।
পিক আপ চালক মুরাদ হোসেন জানান, সড়কটির দীর্ঘদিন যাবত বেহাল অবস্থা, সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু হলে ভেবেছিলাম, এবার মনে হয় দুর্ভোগ থেকে কিছুটা মুক্তি পাবো। কিন্তু হয়েছে উল্টো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সড়কটির এমন অবস্থা করে রেখেছে। যার কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
ভ্যান চালক আরাফাত শেখ জানান, এ সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। সাধারণ মানুষদের চলাচল করতে হয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। আমরা এলাকাবাসী রাস্তাটি অতিসত্বর মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বাদশা জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বারবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি যথারীতি সড়কের কাজ নিয়ে ধীরগতি অবলম্বন করছেন।
নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ইদ্রিস আলী জানান, ঈদের ছুটির কারণে বর্তমানে সড়কের কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে সড়কের কাজের অনিয়ম সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান।
অপর দিকে উপজেলা প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, সড়কের কাজ দেখভাল করার জন্য তাদের প্রতিনিধি সার্বক্ষণিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তবে সঠিক সময়ে সড়কের কাজ শেষ হবে না বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম কবির হোসেন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি এবং জন দুর্ভোগের কথা আমি অবগত হয়েছি। অতি শীঘ্রই জন দুর্ভোগ লাঘবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড