গোলাম মোস্তফা মুন্না, যশোর
উচ্চ আদালতে নদীকে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আইন অমান্য করে গড়ে ওঠা দেশের বড় বড় সব ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ঢাকা-চট্টগ্রামে বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে প্রভাবশালীদের বহুতল ভবন। এর ধারাবাহিকতায় যশোরে ভৈরব নদের পাড়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পানি আইনের ‘প্লাবন ভূমি’র নিয়ম প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২৮ মার্চ দড়াটানা এলাকার শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ফের আটকে যায় উচ্ছেদ অভিযান। উচ্চ আদালতের মামলা আর তদবিরের কারণে এই অভিযান থমকে যায় বলে বলছে একাধিক সূত্র। উচ্ছেদ বন্ধ করতে দখলদাররা উচ্চ আদালতে সবমিলে ৬৪টি মামলা করেন। তবে আশার কথা হলো সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এবার নেওয়া হচ্ছে নতুন উদ্যোগ।
গত রবিবার (১৮ আগস্ট) জেলা উন্নয়ন কমিটির সমন্বয় সভায় ভৈরব পাড়ের সব ভবন উচ্ছেদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী। কালেক্টরেট সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ।
সভায় জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ বলেন, যশোরে ভৈরব নদ খননের জন্য উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এজন্য পানি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পানি আইনের ২০ ও ২১ ধারা অনুযায়ী অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। এজন্য সপ্তাহখানেকের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পানি আইনের প্লাবন ভূমির শর্তানুয়ায়ী ভৈরবের শহর অংশের দুই পাড়ের সব বহুতল ভবন অবৈধ। আইন অনুযায়ী বছরের যে কোনো সময় সর্বোচ্চ যে পর্যন্ত পানি যায় তার উপরের আরো ১০ মিটার হচ্ছে প্লাবন ভূমি। নদীবন্দর ও সমুদ্র বন্দর এলাকায় এর সীমা ৫০ মিটার। সেই হিসেবে ভৈরব পাড়ে সগর্বে দাঁড়িয়ে থাকা সব স্থাপনাই অবৈধ হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কোনো আইনগত বাধা নেই।
এদিকে সরকারের দেওয়া প্রায় ৩০০ কোটি টাকার ভৈরব খননের কাজ নানা জটিলতায় আটকে যায়। শহর অংশের উচ্ছেদ নিশ্চিত না হওয়ায় পাওয়া যাচ্ছিল না ঠিকাদারও। তবে কয়েক দফা দরপত্রের পর ঠিকাদার মিলেছে। আর এবার অবৈধ দখলদার নতুন করে উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামী বলেন, নানা কারণে ভৈরবের যশোর শহর অংশের খনন কাজের জন্য ঠিকাদার পাওয়া যাচ্ছিল না। তবে ষষ্ঠবারের চেষ্টায় ঠিকাদার মিলেছে। অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ অভিযানও শুরু হবে। এবার আমরা পানি আইন প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নতুন এই নিয়মে সীমানা নির্ধারণে সপ্তাহ খানেকের মধ্যে একটি কমিটি গঠন করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভৈরব রিভার বেসিন এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় যশোর শহর অংশের চার কিলোমিটার খননে ব্যয় হবে প্রায় ১১ কোটি টাকা। ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করবে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড