• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

নির্মাণের তিন মাসেই সেতুতে ধস, তদন্তের আগেই সিদ্ধান্ত

  হুমায়ুন কবির সূর্য্য, কুড়িগ্রাম

২২ আগস্ট ২০১৯, ১৬:২৯
কমিটি গঠনের চিঠি
কমিটি গঠনের চিঠিতে তদন্ত শুরুর আগেই সিদ্ধান্ত (ছবি- দৈনিক অধিকার)

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর পূর্ব ধনিরাম গ্রামে নির্মাণের তিন মাসেই সেতু ধসে পড়ার ঘটনায় কমিটি গঠনের চিঠির বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। কমিটি গঠনের চিঠিতে তদন্ত শুরুর আগেই সেতুটি জুলাইয়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবি করা হয়। অথচ সেতুটি ধসে পড়ে ১১ আগস্ট। এমন অবস্থায় সেতু ধসের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত নিয়ে সন্দিহান স্থানীয়রা।

জানা যায়, খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে সেতুটি নির্মাণ করে ফুলবাড়ী উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। চলতি অর্থ বছরে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬শ ৫৬ টাকা ব্যয় হয়েছে সেতুটি নির্মাণে। কুড়িগ্রামের পুরাতন স্টেশন এলাকার এটিএম দেলদার হোসেন টিটু নামের এক ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেন। টেন্ডারে বিলম্ব হওয়ায় সেতুর কাজ শুরু হয় চলতি বছরের এপ্রিল মাসে। তাড়াহুড়া করে নির্মাণ শেষ করে গত ৫ জুন সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়। গত ১১ আগস্ট সেতুটি ধসে পড়ে।

এদিকে এ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর গত ১৮ আগস্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা প্রকৌশলী আসিফ ইকবাল রাজিব (আহবায়ক), উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালাম (সদস্য) এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের উপসহকারি প্রকৌশলী জীবন আহমেদ (সদস্য)।

তবে তদন্ত কমিটি গঠনের চিঠিতেই রয়েছে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য। উপজেলা র্নিবাহী অফিসার মোছা. মাছুমা আরেফিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে আরও বলা হয় ‘সরেজমিন পরির্দশন র্পূবক দেখা যায়, সাম্প্রতিক জুলাই-১৯ মাসের বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’ এই চিঠিতে সেতুটি কী কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তা অনুসন্ধানের কথা বলা হয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘উক্ত কমিটি জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটি পরির্দশন পূর্বক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সঠিক কারণ উল্লেখ পূর্বক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন।’ তবে প্রতিবেদন দাখিলের কোনো সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়নি।

এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকৌশলী অসিফ ইকবাল রাজিব বলেন, ‘কমিটির সদস্যদের নিয়ে গত ২০ আগস্ট সরেজমিন সাইড পরির্দশন করা হয়েছে। এখন ডিজাইন, ড্রয়িং নিয়ে পর্যালোচনা করে দ্রুত রির্পোট প্রদান করা হবে।’

ধসে পড়া সেতু (ছবি- দৈনিক অধিকার)

অপরদিকে, নিম্নমাণের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার ও পরিমাণে কম রড ব্যবহার করে কাজ করায় এ্যাপার্টমেন্ট ওয়ালসহ সেতুটি ভেঙে পড়েছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত সঠিক ডিজাইন ও প্রাক্কলন অনুযায়ী সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ করা এবং বন্যায় সেতুটি ধসে পড়ার দাবি করেছেন।

এলাকার বাসিন্দা শাফিউল আলম বলেন, বন্যা শেষ হবার এক সপ্তাহেরও বেশি সময় পরে সেতুটি ধসে গেছে। কাজেই বন্যার অজুহাতে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ঠিকাদার ও পিআইওকে বাঁচানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আরেফিন জানান, তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিলেই পরবর্তি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন : নির্মাণের তিন মাসেই হেলে পড়ল সেতু

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড