চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় জাহিদ আজিজ নামের পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকের (এএসআই) বিরুদ্ধে পেয়ারা বিক্রেতাকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (১৯ আগস্ট) সন্ধ্যার এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ ও গাড়ি ভাঙচুর করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পেয়ারার দাম বেশি চাওয়ায় ওই পেয়ারা বিক্রেতাকে মারধর করেন এএসআই জাহিদ আজিজ। পরে ক্ষুব্ধ লোকজন সড়ক অবরোধ করে ও গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। এ সময় সংবাদ সংগ্রহকালে এক গণমাধ্যমকর্মীর মোটরসাইকেলসহ আরও অনেক গাড়ি ভাঙচুর হয়। তারপর সবাই রাত ১০টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বসে থাকেন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানা যায়,সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার মইজ্জারটেক এলাকায় মোহাম্মদ আলী (২৫) নামের এক পেয়ারা বিক্রেতার কাছ থেকে পেয়ারা কিনতে যান জাহিদ আজিজ। পেয়ার বিক্রেতা এই জায়গার জন্য খুব পরিচিত মুখ। এ সময় হঠাৎ করে পেয়ারার দাম নিয়ে পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে এএসআই জাহিদ আজিজের বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে বিক্রেতা আলীকে কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন তিনি। মার খেয়ে পেয়ারা বিক্রেতা অচেতন হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি পুলিশ সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠান।
এরই মধ্যে পুলিশের হামলায় পেয়ারা বিক্রেতা মারা গেছেন বলে একটি গুজব ছড়িয়ে পড়ায় বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এতে স্থানীয় লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তারা জড়ো হয়ে কয়েক দফায় সড়ক অবরোধ করে ও গাড়ি ভাঙচুর চালান। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রোশ থেকে এএসআই জাহিদকে বাঁচাতে মইজ্জারটেক পুলিশ বক্সে ঢুকিয়ে রাখা হয়। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যায়। অবরোধকারীরা পুলিশ বক্স লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন।
এ ঘটনায় সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। এ সময় ওই এলাকায় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী জাহিদুল করিম বলেন, পেয়ারা বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী একটি পেয়ারার দাম চান সাত টাকা। ওই পুলিশ সদস্য পাঁচ টাকা দাম বলেন। এতে রাজি না হলে পেয়ারা বিক্রেতাকে মারতে শুরু করেন তিনি। পায়ে ধরে মাফ চাইলেও মার থামাননি পুলিশ সদস্য জাহিদ।
প্রত্যক্ষদর্শী কর্ণফুলী উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম বলেন, ‘পুলিশ সদস্য যে পেয়ারা বিক্রেতাকে মারধর করছেন, সেটি আমি দেখেছি। তবে বিষয়টি তখন পরিষ্কার ছিল না। এখন বিষয়টি পরিষ্কার।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য জাহিদ আজিজ বলেন, ‘আমি পেয়ারা কিনতে গিয়ে দরদাম করার সময় একটু বাড়াবাড়ি হয়। একটা পেয়ারা পাঁচ টাকা দিলেও সে আমার সঙ্গে বাড়াবাড়ি করছে। তার সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায় আমি তার কলার ধরেছি , তবে তার গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা ঘটেনি। তবে যতটুকু দেখেছি তিনি একটু শারীরিকভাবে অসুস্থ ও দুর্বল।’
এ বিষয়ে পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) জাহিদুল ইসলাম বলেন, পেয়ারা বিক্রেতাকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত এএসআইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাতে অভিযোগের প্রমাণ পেলে অবশ্যই তাকে ডিপার্টমেন্টাল শাস্তির আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ বক্সে কারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড