শাহ মুহাম্মদ রুবেল, কক্সবাজার প্রতিনিধি
বিগত কয়েকদিন থেকেই পর্যটন শহর কক্সবাজারে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর হতেই আকাশ অনেকটা রৌদ্রময়। সাগরে স্রোতের তীব্রতা সামান্য বেশি মনে হলেও খুব উত্তাল বলা যাবে না। এজন্যে পর্যটকদের মধ্যে তেমন উৎকণ্ঠা নেই। মেঘ-রোদের লুকোচুরি খেলায় বৃষ্টি মাথায় নিয়ে সাগরের উচ্ছ্বাসে মেতেছেন পর্যটকরা। এর প্রভাব পড়েছে হোটেল-মোটেলগুলোতে। হোটেল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, শহরের প্রায় ৪০০ হোটেল, মোটেল, গেস্ট হাউজের কক্ষ খালি নেই।
ঈদের ছুটি সঙ্গে সরকারি ছুটি মিলে পর্যাপ্ত সময় হাতে থাকায় স্বজনদের নিয়ে সমুদ্র সৈকতসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতে ভিড় জমিয়েছেন ভ্রমণ পিপাসুরা। পর্যটকরা সমুদ্র সৈকতের পাশাপাশি দরিয়ানগর, হিমছড়ি ঝর্ণা, ইনানীর পাথুরে সৈকত, ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক, রামু বৌদ্ধ বিহার, মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরসহ জেলার পর্যটন স্পটগুলোতেও ঢুঁ মারছেন।
কক্সবাজার হোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির তথ্যানুযায়ী, কক্সবাজারের প্রায় সাড়ে ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, রিসোর্ট ও কটেজে রয়েছে। যেখানে লক্ষাধিক পর্যটক অবস্থান করতে পারেন। কক্সবাজার বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সূত্র জানায়, আগত পর্যটকদের সেবা নিশ্চিতে সর্তক অবস্থায় দায়িত্ব পালন করছে টুরিস্ট ও জেলা পুলিশ। মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশও। পর্যটক হয়রানি রোধে পর্যটন স্পটগুলোকে সিসিটিভি ক্যামরার আওতায় আনা হয়েছে। টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে দ্রুত সাধারণ চিকিৎসা ও খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে সমুদ্র সৈকতে। গোসল করাকালীন বিপদাপন্ন পর্যটকদের রক্ষার্থে সর্তক অবস্থায় রয়েছেন লাইফগার্ড কর্মীরা।
চট্রগ্রাম থেকে সৈকতে নববধূ নিয়ে হানিমুনে এসেছেন মিস্টার আলম, তিনি দৈনিক অধিকারকে বলেন, বিয়ে করে বউকে নিয়ে হানিমুনে এলাম কক্সবাজারে। বউকে যখন জিজ্ঞেস করি হানিমুনে কোথায় যাবে? কক্সবাজার থাকতে আর কোথায়! কক্সবাজার কেন এত ভাল লাগে জানতে চাইলে বলেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। একদিকে সাগর অপরদিকে পাহাড়। এই যেন সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে সাজিয়েছেন৷ সমুদ্র স্নান এবং সি-ফুড বেশি ভালো লাগে।
অপর দিকে, বেড়াতে আসা পর্যটকদের সেবা দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। আর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে টুরিস্ট ও জেলা পুলিশ এবং জেলা প্রশাসন।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, টানা ছুটি মাথায় রেখে আগেই পর্যটকরা হোটেল-মোটেল বুকিং দিয়ে রেখেছিলেন। সকাল থেকেই পর্যটকরা ভিড় করেন সমুদ্র পাড়ে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক মো. মামুন জানান, শুধু শীতকাল নয়, বৃষ্টির মাঝেও যে সমুদ্র সৈকতকে এত মোহনীয় লাগে তা ঈদের ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে না আসলে বুঝতে পারতাম না। পরিবারসহ খুবই মজা করছি।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পর্যটক হয়রানি বন্ধে হোটেল-মোটেল ও রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকা টাঙ্গানোর নির্দেশনা আগেই দেওয়া ছিল। সমুদ্র সৈকতের লাবনী, সুগন্ধা, কলাতলীসহ ১১টি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে তথ্য কেন্দ্র (ইনবক্স)। পাশাপাশি দেওয়া হয়েছে একটি হটলাইন নম্বর (০১৭৩৩৩৭৩১২৭)। যে কোনো অভিযোগ এখানে করতে পারবে পর্যটকরা। হটলাইনের সেবা নিয়ে বেশ কয়েকজন পর্যটক হয়রানির বিচার পেয়েছেন। জরিমানা করা হয়েছে কয়েকটি রেস্তোরা ও হোটেলকে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, পর্যটক হয়রানি বন্ধে মাঠে রয়েছে জেলা প্রশাসনের একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত।
টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, টুরিস্ট পুলিশের বিশেষ রেসকিউ টিম, ইভটিজিং কন্ট্রোল টিম, ড্রিংকিং জোন, দ্রুত চিকিৎসাসহ নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে পর্যটকদের নিরাপত্তায়। সৈকতে বিচ বাইক নিয়ে টহল অব্যাহত রেখেছে টুরিস্ট পুলিশ।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড