ভালুকা প্রতিনিধি
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উথুরা ইউনিয়নের হাতিবেড় গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে কুমিরের চাষের জন্য রেপটাইলস্ ফার্ম লিমিটেডের কর্তৃপক্ষ ১৩ একর ৫৬ শতক জমি ক্রয় করে ২০০৪ সালে ৭৪টি কুমির নিয়ে খামারটির যাত্রা শুরু করেছিলেন।
মালয়েশিয়ার সারওয়াত থেকে সোয়া কোটি টাকার মূল্যে আনা হয় ওই ৭৪টি কুমির (২০১০ সালে) গবেষণার জন্য জার্মানির হাইডেলবার্গ নামের একটি বিশ্ববদ্যালয়ে ছোট-বড় মিলিয়ে ৬৯টি হিমায়িত কুমির এক কোটি টাকায় বিক্রি করে প্রতিষ্ঠানটি (২০১৩ সালের) আক্টোবর মাসে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে উপহার হিসেবে পাঁচটি কুমির দেয়া হয়।
বর্তমানে এই খামার থেকে প্রতিবছরে প্রায় ৩০০ কুমিরের চামড়া রপ্তানি হচ্ছে দেশের বাহিরে। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা। বর্তমানে খামারটিতে ছোট-বড় মিলিয়ে আড়াই হাজার কুমির রয়েছে। কুমিরের প্রজনন ও বাসযোগ্য করে খামারটি গড়ে তোলায় ঈর্ষণীয় সফলতার মুখ দেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।
খামারের ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ জানান, ফার্মে ৬-৭ বছর বয়সের একটি মা কুমির বছরে একবার (এপ্রিল-মে মাসে) ৬০ থেকে ৮০টি করে ডিম দিয়ে থাকে। ডিম ফুটাতে সময় লাগে ৭০ থেকে ৮০ দিন পর্যন্ত। প্রজনন মৌসুমে মা কুমিরের ডিম থেকে প্রতি বছর কৃত্রিম উপায়ে কুমিরের বাচ্চা উৎপাদন করা হয়। এখানে সেগুলোকে ধাপে ধাপে নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে হ্যাচারিতে স্থানান্তর করা হয়।
খামারের রক্ষণাবেক্ষণ কর্মীরা বলেন, রপ্তানিযোগ্য কুমিরগুলো হ্যাচারি থেকে তুলে এনে আলাদা ভাবে শেডে রাখা হয়। ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত সেখানে রেখে নানা প্রক্রিয়ার করে কুমির থেকে চামড়া আলাদা করে প্রায় তিন থেকে চার শ কুমিরের চামড়া দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হয়। গত চার বছরে আমাদের মোট ১২৫৬টি কুমিরের চামড়া রপ্তানি করা হয়। আমাদের উদ্দেশ্য (২০২১-২২ সালে) এখান থেকে প্রতি বছর এক হাজার কুমিরের চামড়া রপ্তানি করা। সরকারের অনুমতি পেলে দেশের ফাইভস্টার হোটেলে বিদেশিদের লোকের জন্য কুমিরের মাংস বিক্রি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। তাছাড়া কুমিরের দাত, হাড়সহ অন্যান্য অংশ বিদেশে রপ্তানি করারও পরিকল্পনা রয়েছে খামার কর্তৃপক্ষের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, ভালুকা সদরের শেষ প্রান্তে অজোপাড়া গাঁয়ে এ প্রকল্পটি চালু হওয়াতে এলাকার প্রায় শতাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম দিকে কুমির চাষের মত বিষয়টি এলাকার মানুষের কাছে হাস্যকর ব্যাপার ছিলো। কিন্তু এখন বর্তমানে আমার এলাকায় প্রতিষ্ঠিত এ খামারটি ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূমিকা রাখায় আমি গর্বিত।
ভালুকা উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. হেলাল আহম্মদ জানান, আমাদের কাছে কুমির খামারের লোকজন চিকিৎসা সংক্রান্ত কোন সহযোগিতা চাইলে আমরা তা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সার্বিকভাবে সহযোগিতা করবো।
ওডি/এসএইচএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড