নড়াইল প্রতিনিধি
‘দৈনিক অধিকার’ এ সংবাদ প্রকাশের পরে অবশেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্ত হলো নড়াইলের লোহাগড়ার কুচিয়াবাড়ী গ্রামের তরিকুল ইসলামের পরিবার।
শনিবার (১৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের বাড়িতে পুলিশ গিয়ে বাঁশের বেড়া অপসারণ করে দেয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শেখ ইমরান, লোহাগড়া থানার এসআই মিলটন কুমার দেবদাসসহ একদল পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাত ৭টা ৪৮ মিনিটে ‘দৈনিক অধিকার’ এ ‘জমি বিক্রি করায় অবরুদ্ধ এক পরিবার’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এলে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে অভিযান চালিয়ে অবরুদ্ধ দশা থেকে ওই পরিবারকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগী তরিকুল ইসলাম বলেন, কুচিয়াবাড়ী গ্রামে নিজ বাড়ি ও ক্ষেতের জমি বিক্রির অপরাধে পাশের ঝিকড়া গ্রামের হাফিজুর রহমান ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে হঠাৎ করে বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘরের তিন পাশ ঘিরে ফেলেন। এ সময় আমার মা, স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানসহ আমি ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ি। বিষয়টি জানার পর সাংবাদিকরা ওইদিন বেলা ১১টার দিকে লোহাগড়ার থানার ওসিকে অবগত করলেও তিনি কোনো গুরুত্ব দেননি। এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পর রাতে পুলিশ এসে বাঁশের বেড়া অপসারণ করে।
এখন আমার দুই শিশু সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে ঠিকমত চলাফেরা করতে পারছে। এজন্য নড়াইলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
তরিকুল জানায়, পুলিশ প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর গ্রামবাসীও বিষয়টি মীমাংসার জন্য নড়েচড়ে বসেছেন। এজন্য রবিবার (১৮ আগস্ট) গ্রামবাসী দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব মীমাংসার জন্য আলোচনায় বসেছেন। গ্রাম পর্যায়ে বিষয়টি মীমাংসা না হলে বিকালে লোহাগড়া থানায় সমাধান করার কথা রয়েছে।
এদিকে তরিকুলের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সচেতন মহল।
ভুক্তভোগী তরিকুল আরও জানান, প্রায় ২৫ বছর ধরে কুচিয়াবাড়ী গ্রামে নিজের বসতভিটায় বসবাস করছেন তিনি। মা, স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিয়ে তার সংসার। তার বসতভিটায় প্রায় ৩০ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২৫ শতক নিজের কেনা জমি এবং পাঁচ শতক মায়ের প্রাপ্ত জমি। পৈতৃক ভিটা ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা থানার কামার গ্রামে বসবাস করার জন্য তরিকুল লোহাগড়ার তালবাড়িয়া গ্রামের জহিরসহ তার তিন ভাইয়ের কাছে প্রায় ৩০ শতক জমি বিক্রি করেন।
এ ঘটনায় ভূমি অফিসে জমির কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চলতি বছরের ৩১ জুলাই ওই জমি লোহাগড়ায় রেজিস্ট্রি হয়। এছাড়া গত ৮ আগস্ট ক্ষেতের প্রায় ২১ শতক জমি ত্রিকুলের প্রতিবেশী শিমুল মোল্যা ক্রয় করেন। জমি বেচাকেনার এ বিষয়টি তরিকুলের মামা পাশের ঝিকড়া গ্রামের হাফিজার রহমান জানতে পেরে ক্ষুব্ধ হন। এ ঘটনায় হাফিজার শনিবার (১৭ আগস্ট) সকালে হঠাৎ করে ত্রিকুলের ঘরের তিন পাশে বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দেন। এছাড়া হাফিজার রহমান জমির ক্রেতাদের জমিতে আসতে দিবেন না বলেও হুমকি দেন।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড