ঝালকাঠি প্রতিনিধি
ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার পাটিখালঘাটা ইউনিয়নে এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী বাদল খানের বিরুদ্ধে বাড়ির সামনের খালে বাঁধ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বাঁধের কারণে খালটি মরে যেতে বসেছে। এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তার ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না। শুধু খাল দখল নয় জোরপূর্বক তার বিরুদ্ধে জমি দখলেরও অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঠালিয়ার মরিচবুনিয়া স্কুল থেকে নেয়ামতপুর পর্যন্ত এ খালের উপর এলজিইডির প্রায় ৬০ লাখ টাকা নির্মিত ব্রিজটি দেখে সহজেই অনুমান করা যায় খালটির প্রশস্ততা। বাদল খানের বাড়ির সীমানাছোঁয়া ব্রিজটির নিচ দিয়েই খালটি প্রবহমান। ব্রিজের উত্তর প্রান্তে শেষ সীমানা পর্যন্ত বাদল খানের বাড়ির সীমানা প্রাচীর। তাই বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই খালের ভিতরে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। প্রায় ৩ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি এখান থেকে গিয়ে নেয়ামতপুর মুন্সি বাড়ি খালের সঙ্গে মিশে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, বাদল খান এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি হওয়ায় খালের বাঁধ কাটতে কেহই সাহস পাচ্ছেন না। পাটিখালঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে উপজেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও সুফল মেলেনি।
এলাকার কৃষক শাহিন মোল্লা জানান, বাদল খানের বাড়ির দেয়ালের ভেতরে খালের বাঁধ দেওয়া। বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় নাই। গ্রামবাসী হয়রানির ভয়ে সেই বাঁধ কাটার সাহস পাচ্ছেন না। তাই উপজেলা প্রশাসনের এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নিয়ে খালটির স্বাভাবিক চলাচলে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। শাহিন মোল্লা আরও জানান, আরএস ও এসএ পর্চার রেকর্ড অনুযায়ী আমার বাবা-দাদা মালিক ২৪ শতক জমির। সেই জমি দখল করে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছে বাদল খান।
এলাকার আরেক প্রবীণ ব্যক্তি খলিল জমাদ্দার জনান, এ খালে বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলায় দুপাড়ে কচুরি ও পলি পরে দ্রুত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে এলাকায় চাষাবাদ ব্যাহত হচ্ছে। সেচের পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
বাঁধের বিষয়ে বাদল খানের ভাই শিক্ষক হিরু মিয়া বলেন, আমরা এই বাঁধ দেওয়ার আগে এলাকাবাসী খালে একাধিক বাঁধ দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণ করে চাষাবাদ করেছে। প্রয়োজনে এলাকাবাসী যদি বলে বাঁধটি কেটে দেব। এ বিষয়ে ভাই হিরু মিয়ার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাদল খান জানান, আমাকে আল্লাহ অনেক দিয়েছে। আমি যাই করি এলাকাবাসীর জন্য করি। তারা যদি আমাকে বলে আমি বাঁধ কেটে দেব। না বললে কাটবেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কুরবানির সময় এলাকায় আসছি। প্রয়োজনে কেটে দেওয়ার ব্যবস্থা করব। এটা কোনো বিষয় নয়।
বাঁধের বিষয়ে পাটিখালঘাটা ইউপি চেয়ারম্যান শিশির দাস জানান, এলাকাবাসী জানানোর পর খোঁজ নিয়ে এ খালে বাঁধ দেওয়ার সত্যতা জানতে পারি। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নিলে অবশ্যই সহযোগিতা করা হবে।
কাঠালিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকন্দ মোহম্মদ ফয়সাল উদ্দিন খালে বাঁধ দেওয়ার বিষয়ে বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত এ রকম কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি। তবে এখন যেহেতু জানলাম সার্ভেয়ার পাঠিয়ে সত্যতা পেলে বাঁধটি কেটে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড