শরীয়তপুর প্রতিনিধি
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলায় জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে ধর্ষিত ছাত্রীর মা বাদী হয়ে ডামুড্যা থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন।
এর আগে গত ৩০ জুলাই সকাল ৯টার দিকে বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার পথে ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা।
এদিকে পুলিশ বলছে, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। অপরদিকে মেয়েটির পরিবারের দাবি, আসামিরা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশ ইচ্ছে করেই কোনো আসামিকে গ্রেফতার করছে না।
মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই মেয়েটি কনেশ্বর এস সি এ্যাডওয়ার্ড ইনস্টিটিটিউশনের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। গত ৩০ জুলাই সকাল ৯টায় বাড়ি থেকে স্কুলে যাচ্ছিল সে। এ সময় উপজেলায় ধানকাঠি ইউনিয়নের চরধানকাঠি গ্রামের জয়নাল বেপারীর ছেলে মোমিন বেপারী পেছন থেকে এসে গামছা দিয়ে তার মুখ বাঁধে এবং জোর করে নৌকায় তোলে। পরে চরধানকাঠি গ্রামের হাসান বেপারীর পরিত্যক্ত একটি ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় মেয়েটির আত্মচিৎকারে স্থানীয় সাহিদা বেগমসহ কয়েকজন নারী ঘটনাস্থলে এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে মোমেন বেপারী তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ ঘটনার ন্যায় বিচার পেতে মেয়েটির পরিবার স্থানীয় মাতব্বরদের বিষয়টি অবগত করেন। কিন্তু স্থানীয় মাতব্বরেরা থানায় মামলা করবে বলে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা নেন। টাকা নেয়ার পরও তারা মামলা না করে বিভিন্ন ধরণের তালবাহানা শুরু করেন। পরে মেয়েটির মা শরীয়তপুর আদালতে এসে অভিযুক্ত মোমেন বেপারী ও তার সহযোগী চাচাতো ভাই আবু বেপারীকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতে মামলা হওয়ার পর গত ৭ আগস্ট ডামুড্যা থানায় আরেকটি মামলা হয়। এরপর ১৭ আগস্ট পুলিশ তদন্তের জন্য ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী জানায়, মোমেন বেপারী গামছা দিয়ে পেছন থেকে আমার চোখ-মুখ বেঁধে নৌকায় তোলে। পরে একটি ঘরে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় চিৎকার করলে গলা টিপে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয় সে।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, জয়নাল বেপারীর ছেলে মোমেন বেপারী আমার মেয়ের শ্লীলতাহানি করেছে। আমি একজন কৃষক। বিচার পেতে স্থানীয় মাতব্বরদের কাছে গেলে তারা ৭ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু তারপরও বিচার পাইনি। তাই মোমেন বেপারী ও তার চাচাতো ভাই আবু বেপারীর বিরুদ্ধে থানায় ও কোর্টে মামলা করা হয়েছে।
কনেশ্বর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সাজ্জাদ আলী সাজু বলেন, ঘটনা আরও আগে ঘটেছে। স্থানীয় মাতব্বরদের জন্য মামলা করতে দেরি হয়েছে। পরে ওই মেয়ের পরিবার আমার কাছে আসলে আমি কোর্টে মামলা করার কথা বলি। এ সময় মেয়েটির শ্লীলতাহানির সঠিক বিচার হওয়া দরকার বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ডামুড্যা থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) ইমারত হোসেন দৈনিক অধিকারকে বলেন, এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা বাদী হয়ে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন। মামলার পর মেয়েটিকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে প্ররণ করা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড