শেরপুর প্রতিনিধি
সরকারের নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে শেরপুরের নকলার মৌসুমী কিংবা বুনিয়াদী চামড়া ব্যবসায়ি সবার মাথায় হাত! ঈদের আগে সরকার চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিলেও সে দামে বেচা-কেনা হচ্ছে না কুরবানির পশুর চামড়া।
মৌসুমী ব্যবসায়িরা বলছেন, এ বছর চামড়ার দাম গেল কয়েক বছরের তুলনায় কম। বেশিরভাগ চামড়ার দরদাম হয়েছে ৪০০ টাক থেকে ৬০০ টাকা। কিছু ক্ষুদ্র চামড়া ব্যবসায়িরা লোকসানে বিক্রি করেছেন। অর্থ সংকটের পাশাপাশি সার্বিকভাবে চামড়া খাতের দুরবস্থায় এ বছর এমন দরপতন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ বলছেন এটি এক প্রকার সিন্ডিকেট। ট্যানারি মালিকরা সিন্ডিকেট তৈরী করে চামড়া শিল্পকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিচ্ছে বলে ক্ষুদ্র ব্যবসায়িসহ অনেকে মনে করছেন।
কুরবানির পর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া সংগ্রহ করে নকলা পৌর শহরে নিয়ে আসতে থাকেন মৌসুমী বা বুনিয়াদি ব্যবসায়িরা। সরেজমিনে মতি রবি দাস, রবি রবি দাস, চানুয়া রবি দাস, পরেশ রবি দাস, গিয়ানী রবি দাস, আমালু রবি দাস, মধু রবি দাসসহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চামড়ার বেপারিদের সাথে দর-দামে অনেকটাই হতাশ তারা। তারা বাড়তি দামের আশায় ছুটছেন এক বেপারির থেকে আরেক বেপারির কাছে। যদিও শেষমেষ বেশিরভাগ চামড়ার গড় দাম হয়েছে ৫০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। খুব কম সংখ্যক চামড়ার দাম উঠেছে হাজার টাকার কাছে। ঈদের আগে সরকার দাম নির্ধারণ করে দিলেও কাউকেই সে দামে চামড়া কিনতে দেখা যায়নি।
দলিত বেধে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নকলা উপজেলা শাখার সভাপতি শ্রী সুনীল রবি দাস বলেন, 'যেখানে খাঁটি চামড়ার সামান্য মানিব্যাগ বা একজোড়া জুতো কিনতে গুনতে হয় হাজার টাকার উপরে, আর সেখানে বিভিন্ন স্থানে চামড়া মূল্যহীন ভাবে পড়ে থাকা ভালো লক্ষন নহে।'
তিনি বলেন, 'এ দেশ থেকে পাটের সম্মান চলে গেছে বেশ আগেই। এখন চামড়ার দিকে নজর পড়েছে অজ্ঞাত কুচক্রি মহলের। পরে হয়তোবা পোশাক শিল্পের দিকে নজর দিবে তারা।' তাই সরকারকে এখনই এদিকে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করেন তিনি।
মৌসুমী ব্যবসায়ি নারায়ন রবি দাস, মেগু রবি দাস, নিরেন্দ্র রবি দাস, বুলু রবি দাস জানান, গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবার দাম তুলনামূলক ভাবে সবচেয়ে কম। কাঁচা চামড়া ব্যবসায়িদের নেতারা জানান, আর্থিক সংকট, রপ্তানি প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং সার্বিকভাবে চামড়ার খাতের দুরাবস্থার কারণেই এবছর এমন পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
বাজারে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাঁচা চামড়া রপ্তানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেইসাথে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া কেনাবেচায় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা চেয়েছেন সরকার। কিন্তু ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা বরাবরের ন্যায় এবছরও লোকসান গুণতে হচ্ছে। লাভবান হচ্ছেন সিন্ডিকেট তৈরীকারী খুদ ট্যানারি মালিকরা। উল্লেখ্য, দেশে মোট চামড়ার ৭৫ থেকে ৮০ শতাংশের যোগান আসে কোরবানির পশু থেকে। চামড়া নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য মধ্যসত্বভোগীদের উপর দায় চাপিয়েছেন ট্যানারি মালিকরা। কয়েক বছর ধরে চলা অব্যবস্থাপাই কাঁচা চামড়া নিয়ে এমন সংকটের জন্য দায়ী বলেও অভিযোগ মৌসুমী কিংবা বুনিয়াদী চামড়া ব্যবসায়ীদের।
ওডি/এএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড