রিয়াদ হোসাইন, মুন্সীগঞ্জ
ঈদুল আজহার আর মাত্র ২ দিন বাকি। এর মধ্যে পছন্দের কুরবানির পশু কিনতে পশুর হাটগুলোতে ছুটে বেড়াচ্ছেন ক্রেতারা। থেমে নেই কামারিরাও। দিনরাত একাকার করে কাজ করছেন কামারিরা। কদরও বেড়েছে গো-খাদ্য, কাঠের গুঁড়ি (খাটিয়া), পাটি ও পশু জবাই করার জন্য ছুরি-চাপাতির।
মুন্সীগঞ্জের বেশ কয়েকটি পশুর হাট ঘুড়ে দেখা যায়, প্রতিটি হাটে কাঠের গুঁড়ি (খাটিয়া), পাটি, গরুর খাবার ভুষি-গম নিয়ে বসে আছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও কয়েকটি হাটে দেখা যায় অস্থায়ী কামারশিল্পীদের টুং টাং শব্দে মুখরিত হাট এলাকা।
কুরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য কাঠের গুঁড়ি ( ছবি : দৈনিক অধিকার )
জেলার ঐতিহ্যবাহী হাটের মধ্যে একটি দিঘীরপাড় পশুর হাট। এই হাটে ছোট-বড় বিভিন্ন আকৃতির খাটিয়া নিয়ে বসে আছেন দিদারুল ইসলাম। তিনি জানান, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বেশ ভালোই বিক্রি হয়েছে। তেতুল ও কড়ি গাছের গুঁড়ি কিনে পিস করে বিক্রি করছেন তিনি। প্রতি পিস আকার ভেদে ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৩শ টাকা বিক্রি করছেন।
অন্যদিকে কুরবানির পশুর পাশাপাশি পাটি বিক্রির ধুম পড়েছে। বিক্রেতা জুবায়ের হোসেন জানান, হোগলার তৈরি পাটির চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি পাটির দাম রাখা হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। যারা কুরবানির গরু কিনে নিচ্ছে মূলত তারাই এই পাটি গুলো কিনচ্ছেন বলে জানান তিনি। দিঘীরপাড়ের পশুর হাটের দক্ষিণ পাশেই গরুর খাবার নিয়ে বসে আছেন মো. সামছুল খান। তিনি জানান, ব্যবসা এবার ভালো হচ্ছে। দুই কেজি মিশ্রিত ভূষি বিক্রি করেছেন ১০০ টাকায়। যা তার আয়ে বাড়তি যোগান দিচ্ছে।
কুরবানির পশুর মাংস রাখার জন্য পাটি ( ছবি : দৈনিক অধিকার )
এছাড়াও দিঘীরপাড় পশু হাটের দক্ষিণে আগুনে পোড়ানো নরম লোহায় হাতুড়ি পেটানো টুং টাং শব্দে দিনরাত সমান করে ব্যস্ত সময় পার করছেন দিঘীরপাড়ের কামার শিল্পীরা। অধিক পরিশ্রম হলেও বছরের অন্য সময়ের চেয়ে বাড়তি রোজগারের আশায় ক্লান্তি ভুলে ব্যস্ত তারা।
দিঘীরপাড়ের কামারশিল্পীরা জানায়, লোহার মানভেদে একটি দা ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা (পাকা লোহা), আর কাঁচা লোহার দা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। পশুর চামড়া ছাড়ানোর ছুরি ১৫০ থেকে ৩৫০, পশু জবাইয়ের বিশেষ ছুরি ৫০০ থেকে ৩ হাজার, কুড়াল ৬০০ থেকে ১ হাজার ১শ, বঁটি ৩০০ থেকে ৮০০, চাপাতি ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা যায়, প্রতি পিস ছোট ছুরি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকায়, চাপাতি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, মাঝারি আকারের ছুরি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকায় এবং বঁটি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
কামার রঞ্জত কুমার জানান, কয়লার দাম বাড়ায় অর্থ সংকট দেখা দিয়েছে। তাই চাহিদা অনুযায়ী মাল তৈরি করতে পারছি না। গত বছর প্রতি বস্তা কয়লার দাম ছিল ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে এ বছর প্রতি বস্তা কয়লার দাম পড়ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। তাই লোহার এসব সরঞ্জাম তৈরিতে ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে।
কামারশিল্পী সিমান্ত বলেন, আশা করি গত ঈদের চেয়ে এবার ঈদে বিক্রি বেশি হবে। দা, বঁটি, ছুরি ও চাইনিজ কুড়াল এগুলো ঈদ এলে বেশি বিক্রি হয়।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড