পাবনা প্রতিনিধি
পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া গ্রামের নিহত স্কুলছাত্র অনিবাবুদের বাড়িতে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) গভীর রাতে বাইরে থেকে ঘরের দরজায় কড়া (ছিটকিনি) আটকে দিয়ে আগুন দেওয়া হয়। তবে বাড়ির সবাই ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে গেছেন।
অনিবাবুর বড় ভাই আশিক মাহমুদ অভি জানান, বৃহস্পতিবার রাতে তারা রাতের খাবার শেষে পরিবারের সবাই সেমি পাকা ঘরে যে যার কক্ষে ঘুমিয়ে যান। রাত দেড়টার দিকে তিনি প্রথমে আগুনের তাপ অনুভব করেন। এ সময় তিনি দেখেন তাদের ঘরের চারদিকে ও ঘরের চালায় আগুন ধরে গেছে। এ সময় তিনি চিৎকার করে তার বাব-মা ও ছোট ভাইকে ডেকে তোলেন। কিন্তু তারা ঘরের দরজা খুলতে গিয়ে দেখেন বাইরে থেকে কড়া আটকানো। তবে ভাগ্যক্রমে মাঝের রুমে কড়া না থাকায় সেটি দিয়ে তারা বাইরে আসতে সক্ষম হন এবং প্রাণে বেঁচে যান।
আশিক মাহমুদ অভি আরও জানান, বাইরে এসে তারা দেখেন বারান্দায় রাখা তাদের পরিবারের চারটি মোটরসাইকেলে আগুন জ্বলছে। এ সময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। তার আগেই ঘরে কিছু অংশ এবং আসবাবপত্র পুড়ে যায়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলেও তারা ঘটনাস্থলে আসেনি বলে অভি জানান।
নিহত স্কুলছাত্র অনিবাবুর বাবা ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম প্রামানিক জানান, তার ছেলে অনিবাবু হত্যা মামলার তদন্ত রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এছাড়া অনির সহপাঠী ও এলাকাবাসীও মামলা ধামাচাপা চেষ্টার প্রতিবাদে এবং এ হত্যা মামলা পিবিআইয়ে (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) স্থানান্তর করে পুনঃতদন্ত দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
রবিউল ইসলাম বলেন, পুলিশ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে শুধু ১৪ বছর বয়সী জয়কে আসামি দেখিয়ে চার্জশিট দিয়েছে। তিনি বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জয়ের পরিবারের বড় সদস্যরাও কোনো না কোনোভাবে জড়িত। কিন্তু পুলিশ এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়নি। তিনি জানান, ঢাকায় লেখাপড়া করা তার বড় ছেলে আশিক মাহমুদ অভি সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টে যাওয়ার এবং পুলিশের আইজিপি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করার কথা জানান। অভি মাত্র দুদিন আগে বাড়ি এসেছে। সে বাড়ি আসার পরদিনই তাদের সপরিবারে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছে। ছেলে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করাই তার জীবনের জন্য কাল হয়েছে বলে তিনি জানান।
এ দিকে দুবলিয়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মনোরঞ্জন শীল জানান, তিনি খবর পেয়ে সকালেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দুপুর ১২টায় ঘটনাস্থলে গেছেন আতাইকুলা থানার ওসি (তদন্ত) কামরুজ্জামান।
ঘটনাস্থল থেকে ওসি জানান, এটি পূর্বশত্রুতার জের ধরে বা অনিবাবু হত্যা মামলার সঙ্গে জড়িত কারও দ্বারাও সংঘটিত হতে পারে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে তিনি জানান। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
গত বছরের ৩০ নভেম্বর রবিউল ইসলাম প্রামানিকের স্কুল পড়ুয়া ছেলে অনিবাবু (১৪) দুবৃর্ত্তদের হাতে খুন হন। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের জন্য নিহতের পরিবার মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তরের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আবেদন নিবেদন করে আসছিলেন। এর জের ধরেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে রবিউল ইসলামের পরিবারের আশঙ্কা। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে কেউ এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে পুলিশ বলছে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড