পিরোজপুর প্রতিনিধি
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ৪ নম্বর দাউদখালী ইউনিয়নে মৎস্যজীবীদের ভিজিএফের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রকাশ্যে ভিজিএফের এ চাল বিতরণকালে জনপ্রতি অন্তত পাঁচ কেজি করে চাল কম দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সরেজমিনে দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে এ চিত্র দেখা যায়। এ ঘটনায় তালিকাভুক্ত মৎস্যজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের নিচতলায় চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক খান (রাহাত) ভিজিএফ চাল বিতরণের উদ্বোধন করেন। এরপর পরিষদ ভবনের উপর তলায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে অবস্থান নেন চেয়ারম্যান। আর তখন থেকেই চলতে থাকে জনপ্রতি ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম চাল না দিয়ে ৪ থেকে ৫ কেজি করে চাল কম দেওয়ার মহোৎসব। খোদ ট্যাগ অফিসার ও মৎস্য সুপারভাইজারের দুইজনের একজনকেও দুপুর ১টা পর্যন্ত দেখা যায়নি চাল বিতরণের স্থানে।
৪ নম্বর দাউদখালী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন (ছবি : দৈনিক অধিকার)
এই পুরো চাল বিতরণকালীন সময়ে ট্যাগ অফিসার হিসাবে দায়িত্বে থাকা সমাজসেবা বিভাগের ফিল্ড সহকারী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এবং মৎস্য বিভাগের ফিল্ড সহকারী মনিরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। এ দিন বিকাল পর্যন্ত দাউদখালী ইউনিয়নে কেবলমাত্র ১ নম্বর ওয়ার্ড বাদে বাকি ৮টি ওয়ার্ডে অনুমোদিত ভিজিএফ কার্ডধারী ৭২৯ জনের মধ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭১১ জনকে। এ ব্যাপারে ভিজিএফের চাল নিতে আসা নলবুনিয়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষ্ণকান্ত ঘরামীর স্ত্রী যুথিকা রানী, শ্যামল ঘরামীর স্ত্রী পারুল রানী এবং মৃত কার্তিক চন্দ্র শীলের ছেলে নারায়ণ চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, তাদের প্রত্যেককেই ৪০ থেকে ৪১ কেজি করে চাল দেওয়া হয়েছে।
চাল নিতে আসা মৎস্যজীবীদের একজন (ছবি : দৈনিক অধিকার)
তবে চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক খান (রাহাত) চাল কম দেওয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘চাল বরাদ্দ কতটুকু তা আমি জানিনা। মাল আনার জন্য কোনো ক্যারিং দেয় না, এবার ক্যারিংয়ের জন্য ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে কেরিংবাবদ দুই কেজি বা গোডাউনে বস্তাপ্রতি কম আছে। খরচের জন্য ইউএনও স্যার দুই কেজি করে কম দিতে পারেন বলেছেন। সে মিটিংয়ে আমি যাইনি, আমার প্যানেল চেয়ারম্যান গেছে।’
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন জানান, সাগরে ৬৫ দিনের জন্য মৎস্য আহরণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ভিজিএফ কার্ডধারী প্রত্যেক জেলেকে এবারে ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই দীর্ঘ ৬৫ দিন ধরে জেলেদের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের (তালিকা ভুক্ত) সরকারিভাবে ভিজিএফের চাল বরাদ্দ করে সরকার। এ অনুযায়ী প্রতিটি জেলে পরিবারকে দুই কিস্তিতে চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে প্রথমে জুন মাসে জনপ্রতি ৪০ এবং চলতি মাসে দ্বিতীয় বারের মতো ৪৬ কেজি ৬৬০ গ্রাম চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু ৪ নম্বর দাউদখালী ইউনিয়নের মৎস্যজীবীদের ভিজিএফের এ চাল বিতরণে উল্টো চিত্র বাস্তবায়ন করেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ।
ওডি/আইএইচএন
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড