• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাজিরায় আবারও ভাঙন, ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন

  শরীয়তপুর প্রতিনিধি

০৭ আগস্ট ২০১৯, ১৪:০৯
নদী ভাঙন
নদী ভাঙন (ছবি : দৈনিক অধিকার)

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের উকিল উদ্দিন মুন্সী কান্দিগ্রাম আবারও ভাঙতে শুরু করেছে। গত ১০ দিনের ব্যবধানে ওই গ্রামের ৩৫ বিঘা ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন শুরু হওয়ায় সিরাজুল ইসলাম বেপারী, ইদ্রিস বেপারী, মজিবর রহমান ছৈয়াল, আবুল কালাম মৃধা, সজল তালুকদার, শাহজাহান খান, রুবেল বেপারী, নুরুল ইসলাম বেপারী এবং আবুল কালাম বেপারী নামে নয়টি পরিবার তাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে।

এদিকে ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ইতোমধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলতে শুরু করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহাতে ভিটেমাটি কুরবানি দিয়ে নিঃস্ব পরিবার গুলো আশ্রয় নিয়েছে অন্যের জায়গায়। পদ্মা নদীর স্রোত এবং ঢেউয়ের কারণে ঘর বাড়িসহ ফসলি জমি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

নদীর পাশেই কয়েকটি শূন্য ভিটা পড়ে রয়েছে। ২-১ দিন আগেও এখানে বসতবাড়ি ছিল। নদী ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা পেতে ওই পরিবার গুলো বসতভিটা রেখে অন্যত্র চলে গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পদ্মা নদীর তীরবর্তী জিরো পয়েন্টে অবস্থিত পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের উকিল উদ্দিন মুন্সী কান্দি গ্রামের শাহজাহান খানের বাড়ি থেকে শুরু করে সিরাজুল ইসলাম বেপারীর বাড়ি পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকার কিছু কিছু অংশ প্রতি বছরই পদ্মা নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

এ বছর আবার নতুন করে ভাঙন শুরু করেছে পদ্মা নদী। গত ১২ বছরে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে এই গ্রামের কয়েক হাজার পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে।

পদ্মা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত সিরাজুল ইসলাম বেপারী, নুরুল ইসলাম বেপারী এবং লাইলি বেগম বলেন, বাপ-দাদার ভিটেমাটিতে থাকতাম। কিন্তু কয়েক দিনের ব্যবধানে তা নদীতে চলে গেল। পদ্মা নদী আমাদেরকে একেবারে নিঃস্ব করে দিয়েছে। এখন বাধ্য হয়ে অন্যের জমিতে ঘর তুলে থাকতে হচ্ছে।

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মঙ্গল মাতব্বর বলেন, কয়েক দিন ধরে নদীতে প্রবল স্রোত বইছে। ভাঙন আতঙ্কে এই গ্রামের নয়টি পরিবার অন্যত্র চলে গেছে।

পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লাল চান মাতব্বর দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমি ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙনে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেই পরিবার গুলোর একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ত্রাণসহ সব ধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ সহকারী প্রকৌশলী সুমন বণিকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাজিরা জিরো পয়েন্ট থেকে শুরু করে ৭৩ মিটার জায়গা ভাঙন প্রবণ এলাকা। ভাঙন রোধে চার হাজার ৩শ জিও ব্যাগ ফেলা হবে। শনি ও রবিবার ৮শ জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তবে আগের থেকে এখন ভাঙনের মাত্রা অনেকটা কমে গেছে।

এ ব্যাপারে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের দৈনিক অধিকারকে বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙন শুরু হলে রক্ষা করা কঠিন হয়ে যায়। ভাঙন রোধে পাউবো কাজ করছে। নড়িয়া উপজেলায় ভাঙন রোধ হয়েছে। জাজিরার পূর্ব নাওডোবা ভাঙছে শুনলাম। আমি জেলা পাউবো কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব, তারা যেন ভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেন। যাতে করে আর একটি ঘরও যেন ভাঙনের কবলে না পড়ে।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড