চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি
ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদের বাকি আছে মাত্র কয়েকটা দিন। স্থানীয় খামারিরা তাদের খামারে দেশীয় জাতের গরু পালন করেছেন। ফলে দেশীয় গরুতেই জমজমাট চাঁপাইনবাবগঞ্জের পশুর হাটগুলো। এবার হাটগুলোতে ভারতীয় গরুর দেখা মিলেছে কম। এতে দেশি গরু বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। ফলে দেশি গুরুর ভালো দাম পাচ্ছেন খামারিরা।
প্রতিবছর কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে, দেশের কুরবানির পশুর একটি বড় অংশ সরবরাহ হয় সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ দিয়ে আসা ভারতীয় গরু থেকে। তবে এবার চিত্র কিছুটা ভিন্ন। খাটালগুলো বন্ধ থাকায় সীমান্ত পথ পেরিয়ে আসছে না ভারতীয় গরু। যার প্রভাব পড়েছে জেলার পশুর হাটগুলোতে।
এদিকে খামারিরা এবার স্থানীয়ভাবে গরু পালন করেছেন অনেক বেশি। এতে হাটগুলোতে দেখা গেছে দেশি গরুর সরবরাহ গত বছরের তুলনায় অনেকাংশে বেশি। আর বাজারে ভারতীয় গরুর আনাগোনা কম থাকায় চাহিদা বেড়েছে দেশি গরুর। তবে দাম বেশি হওয়ায় খামারিরা খুশি হলেও ক্রেতারা সন্তুষ্ট নয়। স্থানীয় খামারি কামাল উদ্দিন জানান, এবার হাটগুলোতে দেশি গরুর ভালো দাম পাচ্ছেন খামারিরা। ভারত থেকে এবার গরু না আসায় ক্রেতারা দেশি গরুর দিকে ঝুঁকছেন।
বটতলাহাটে গরু বিক্রি করতে আসা কৃষ্ণগোবিন্দপুরের এনামুল হক জানান, চাহিদার তুলনায় গরুর সরবরাহ কম থাকায় দেশি গরুর দাম ভাল পাওয়া যাচ্ছে।
তবে সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। ক্রেতাদের অভিযোগ, ভারতীয় গরুর আমদানি না থাকায় দেশি গরুর দাম বেশি হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা। ছোট গরু এ বছর ৫৫ থেকে ৬৫ হাজার টাকা, মাঝারি গরু ৭০ থেকে ৯০ হাজার টাকা এবং বড় গরু ১ লাখ থেকে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ভারতীয় গরুর আনাগোনা কম থাকায় চাহিদা বেড়েছে দেশি গরুর ( ছবি: দৈনিক অধিকার)
এদিকে হাটগুলোতে গরুর সংখ্যা কম হলেও এবারও কুরবানি পশুর সংকট হবে না বলে দাবি প্রাণিসম্পদ বিভাগের।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ডা.আনন্দ কুমার অধিকারি জানান, জেলায় এবার ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭০টি গবাদি পশু কুরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় এবার কুরবানিতে গরুর কোনো সংকট হবে না। জেলার কুরবানির হাটগুলোতে আটটি প্রাণিসম্পদ মেডিকেল দল গঠন করা হয়েছে। এ সকল দল নির্ধারিত দিনে পশুর হাটগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন ও হাট ইজারাদারদের সঙ্গে রোগাক্রান্ত গরু শনাক্তকরণে কাজ করছে।
প্রাণিসম্পদ বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, কুরবানির জন্য ভারতীয় কোনো গরুর প্রয়োজন নেই। তাছাড়া কুরবানিতে ক্রেতাদের দেশি গরুর প্রথম পছন্দ। এ বছর তারা দাম ভালো পাচ্ছে। গরুর দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে।
পুলিশ সুপার টি এম মোজাহিদুল ইসলাম জানান, কুরবানির হাট উপলক্ষে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশের টহল দল নিয়োজিত আছে হাটগুলোতে। জাল টাকার লেনদেনে সতর্ক রয়েছে পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া হাটগুলোতে সোনালী ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক জাল টাকা শনাক্তকরণে মেশিন স্থাপন করেছে।
পুলিশ সুপার বলেন, মোকামগুলোতে ট্রাকযোগে গরু নিয়ে যাবার সময় পথে পথে হয়রানি ও চাঁদাবাজি বন্ধে ট্রাকগুলোতে ব্যানার টাঙ্গানো থাকবে।
এ বছর পঞ্চগড় জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ১৬টি কুরবানির পশুর হাট বসেছে। তার মধ্যে বড় হাটগুলো হচ্ছে- সদর উপজেলার বটতলা ও রামচন্দ্রপুর হাট, শিবগঞ্জ উপজেলার তর্তিপুর, খাসের হাট,মনাকষা ও কানসাট হাট, গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর হাট, ভোলাহাট উপজেলার গোহালবাড়ী হাট ও নাচোল উপজেলার সোনাইচন্ডি হাট।
জেলায় এবার কুরবানির পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫৭০টি। তবে শেষ মুহূর্তে বাজার স্বাভাবিক হয়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা ক্রেতা-বিক্রেতা, ইজারাদারদের।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড