রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় দুই সন্তানের জননীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মাসুদ রানার (৩৬) বিরুদ্ধে। বুধবার (৩১ জুলাই) বিকালে উপজেলার সিম্বা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ রাতে ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় ওই রাতেই গৃহবধূর বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে রাণীনগর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সিম্বা গ্রামের মো. আফসার আলীর ছেলে মো. মাসুদ রানা প্রায় ১৬ বছর আগে একই উপজেলার বেলবাড়ি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাকিলা আক্তার শ্যামলীকে (৩২) আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করে। তাদের সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলে সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। আর মেয়ের বয়স সাড়ে চার বছর।
স্থানীয়রা জানায়, হঠাৎ করে প্রায় দুই মাস আগে স্ত্রীর অজান্তে দ্বিতীয় বিয়ে করে মাসুদ রানা। দ্বিতীয় স্ত্রী একই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের বিধবা মেয়ে তিন সন্তানের জননী সালমা বেগম (৩০)। দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে প্রথম স্ত্রীর প্রতি শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। এ নিয়ে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমাধানের চেষ্টায় দফায় দফায় বৈঠক হলেও মাসুদ রানার দাম্ভিকতার কারণে সুষ্ঠু কোনো সমাধান হয়নি। এক পর্যায় বুধবার বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে স্ত্রী শ্যামলীকে পিটিয়ে হত্যার পর মাসুদ নিজেই শ্বশুর বাড়িতে খবর দেয় যে তাদের মেয়ে গুরুতর অসুস্থ, তাড়াতাড়ি আসেন হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। পরে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বাড়িতে পৌঁছানো মাত্রই তড়িঘড়ি করে লাশ একটি ভ্যানে করে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয় মাসুদ রানা। এরপর কৌশলে পালিয়ে যায় সে।
কিন্তু এর মধ্যে শ্বশুর বাড়ির লোকজন বুঝতে পারে তাদের মেয়ে আর বেঁচে নেই। পরে তারা লাশ নিয়ে বাড়িতে ফিরে গিয়ে থানা পুলিশকে খবর দিলে বুধবার রাতে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাশ উদ্ধার।
গৃহবধূর বাবা আব্দুস সাত্তার জানায়, প্রায় দুই মাস আগে মাসুদ দ্বিতীয় বিয়ে করে। ওই বিয়ের পর থেকে আমার মেয়ের ওপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে শুরু করে। এর সমাধান করতে গ্রামের লোকজনদের নিয়ে কয়েক দফায় বৈঠকও করা হয় কিন্তু মাসুদ ওই সব বৈঠকের সমাধান না মেনে নির্যাতন অব্যাহত রাখে। এর ধারাবাহিকতায় বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো. মাহবুব আলম বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর বাবা আব্দুস সাত্তার বাদী হয়ে থানায় মাসুদ রানাকে প্রধান আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে গৃহবধূর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায় বলে জানায় পুলিশ। আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ওডি/এসএএফ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড