হুমায়ুন কবির সূর্য্য, কুড়িগ্রাম
‘বাহে ৭০ হাজার টাকা ঋণ করি গাইটের টেকাসহ ৯০ হাজার খরচ করি জমিত পটল, ঢেড়স, লালশাক, মরিচ লাগাইছি। মাসে আড়াই হাজার টাকা কিস্তি দেওয়া খায়। বান আসি সউগ খায়া নিয়া গেইল। এলা খামো কী, কিস্তি শোধ আর সংসার চালামো কেমন করি’- চরম হতাশা আর আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের শুলকুর বাজার সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা কাচু মিয়ার ছেলে সাইদুল।
তিনি জানান, বন্যা না হলে এবার তিনি প্রায় ৪ লাখ টাকার সবজি বিক্রি করতে পারতেন। এতে ঋণ শোধ করে ভালোভাবে সংসার চালিয়ে আগামী বছরের জন্য খরচের জোগান দিতে পারতেন।
একই এলাকার আকতার উদ্দিনের ছেলে খায়রুল, কাচুসহ ৮ জন সবজি চাষ করেছেন। সবাই লোকসান গুণে এখন কিস্তির টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন এ নিয়ে রয়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়।
দক্ষিণ নওয়াবশ এলাকায় প্রায় ১০জন চাষি পাশাপাশি পটল, ঢেড়শ, মরিচ, লালশাক, কুমড়া, বেগুন, সাতপুতি লাগিয়েছিলেন। বন্যা এসে সব আবাদ নষ্ট করে দিয়েছে।
পানি নামতেই ভেসে উঠছে ক্ষত (ছবি- দৈনিক অধিকার)
একাধিক কৃষক জানান, এবার তারা ধারণাই করতে পারেননি এত বড় বন্যা হবে। গতবার লাভ করে এবার বেশি জমিতে সবজিচাষ করেছেন অধিক লাভের আশায়। কিন্তু বন্যা এসে সব আনন্দ মাটি করে দিয়েছে। খরচ তুলতে না পেরে অনেকে এখন পথে বসে যাবার জোগাড়।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্র জানায়, চলতি বছর অতিবৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে জেলার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়। যার ফলে মাঠে ৩৩ হাজার ৪৪২ হেক্টর সবজির মধ্যে ১৯ হাজার ৬৩৮ হেক্টর ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়। এতে টাকায় ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫৬ কোটি ৩৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ১ লাখ ৭৫ হাজার ৩২৪ জন।
এই বিশাল ক্ষতি কমিয়ে আনাতে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, সরকার ক্ষতিগ্রস্ত ইউনিয়নগুলোতে কৃষি বিভাগ থেকে নতুন করে ২ একর জমিতে কমিউনিটি বীজতলার মাধ্যমে কৃষকদের সহায়তা করা হবে। পাশাপাশি যারা রবি শষ্য লাগিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন তাদের তালিকা করা হয়েছে। সরকার তাদের প্রণোদনা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড