• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সড়ক নয়, যেন মরণফাঁদ!

  উখিয়া প্রতিনিধি, কক্সবাজার

৩০ জুলাই ২০১৯, ১৪:৩৪
সড়ক
খানাখন্দ ও গর্তে ভরা কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়ক (ছবি : দৈনিক অধিকার)

কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে খানাখন্দ ও গর্তের ফলে যান চলাচল ও যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে গর্তের সৃষ্টি হয়, ব্যাপক ভাঙা সড়কের ফলে যান চলাচল করায় দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। কোথাও কোথাও চলাচলের অনুপযোগীও হয়ে পড়েছে। পানি জমে থাকা এসব গর্তে প্রতিনিয়ত ছোট বড় দুর্ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। অন্যদিকে পত্রিকায় লেখালেখি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সড়কের বেহাল দশার চিত্র ভাইরাল হলে ইট-বালু ঢেলে জোড়াতালির সংস্কার করে দায় সারে সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের এহেন কর্মকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ জনতা থেকে শুরু করে সচেতন মহলের।

এলাকার সচেতন লোকজন বলছেন, সারা বছর সড়ক সংস্কার না করে মানবতার ট্রাঙ্গল পয়েন্ট উখিয়া-টেকনাফ এলাকায় রোহিঙ্গাদের দেখতে সারা বিশ্বের নেতৃবৃন্দ এলে হুড়োহুড়ি করে জোড়াতালি দিয়ে ইট বালু দেওয়া হয় সড়কে। ফলে সেটা টেকসই বা স্থায়ী সমাধান হয় না। টেকসই সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়ায় এই সড়কের বেহাল দশা থেকেই যাচ্ছে। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের প্রস্থ বর্ধিত করণের কাজ করা হলেও সড়কের মধ্যখানের খানাখন্দ ও গর্তের সংস্কার করা হচ্ছে না। তারা আরও বলেন, অথচ আর কয়েকদিন পরেই ঈদুল আজহা। লাখ লাখ মানুষ প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বিভিন্ন গন্তব্যে যাবেন। এসব ভাঙা সড়ক পাড়ি দিতে তাদের পোহাতে হবে চরম দুর্ভোগ।

সরেজমিনে উখিয়ার পালংখালী, থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং, উখিয়া, কোটবাজার ঘুরে দেখা যায়, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ভেঙে বড় গর্তে পরিণত হয়েছে, গর্তের মধ্যে পানি জমে থেকে কাঁদামাটির সৃষ্টিসহ যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের কিছু কিছু অংশে ইট-বালু দিয়ে গর্ত ভরাট করার চেষ্টা করা হলেও অল্প বৃষ্টিতে তার চিহ্ন এখন আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

কয়েকজন বাস ও ট্রাক চালক জানান, উখিয়া থেকে টেকনাফ দুই ঘণ্টার বেশি সময় লাগার কথা না। সেখানে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে রাস্তার দুরবস্থার কারণে। আর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলাচলকারী অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে এই দুর্ভোগ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

মহাসড়কে দায়িত্ব পালনরত ট্রাফিক পুলিশের টিএসআই মো. বাবুল জানান, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কটিতে গর্ত ও খানাখন্দের কারণে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় কিছুটা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এইছাড়াও গর্তের কারণে ইজিবাইকগুলো নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়ে এবং যানযট সৃষ্টি হয়।

উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ নেতা সালাউদ্দিন বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুল-কলেজ যাতায়াতে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। গত জে এস সি, এস এস সি ও এইচ এস সি পরীক্ষায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে অনেককে নানা প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সড়কের এই দশার ফলে গাড়ি ভাড়া দ্বিগুণ হয়েছে। তবে সরকারিভাবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সওজ বিভাগকে। কিন্তু কেন তারা বাৎসরিক মেরামত কাজটি করেনি সেটা আমাদের জানা নেই। তারা কি কোনোভাবে সরকারের অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাই?

উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কটি দেশের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। রোহিঙ্গা আসার পর থেকে সড়কে ত্রাণ ও বাঁশ বহনকারী অতিরিক্ত ওজনের গাড়ির ফলে সড়কের আরও বেহাল দশা হয়েছে। এছাড়াও সড়কে এনজিওর গাড়িগুলো একজন যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে ফলে সৃষ্টি হচ্ছে যানযট। তিনি বলেন, মহাসড়কের এই দুরাবস্থার জন্য দায়ী সড়ক ও জনপদ বিভাগ। তাদের অধীনস্থ এই সড়কে হচ্ছে না কোনো সংস্কার। তারা আন্তরিক হলে সংস্কারের উদ্যোগ নিলে উখিয়া-টেকনাফের মানুষের এই দুর্ভোগ পোহাতে হতো না। তিনি আরও বলেন, এই মহাসড়কটি শীঘ্রই সংস্কার করা না হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

কোটবাজার বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কবি আদিল চৌধুরী বলেন, কক্সবাজার-টেকনাফের মহাসড়কের কিছু অংশে মরণফাঁদ সৃষ্টি হয়েছে। সড়কের এই বেহাল অবস্থার ফলে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলে এর দায়ভার নিবে?

এই ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিকারুজ্জামান বলেন, সড়ক সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার সড়ক ও জনপদ বিভাগকে অবহিত করেছি। কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন তারপরও জনদুর্ভোগ লাঘবে গত কুরবানির ঈদে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সড়ক সংস্কার করা হয়। উপজেলার জন্য বরাদ্দকৃত বাজেট স্বল্প হওয়ায় চাইলেও মহাসড়কটি সংস্কার করা সম্ভবপর হয়ে উঠে না।

ওডি/এসজেএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড