বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার গাবতলীতে গণপিটুনির শিকার হওয়া চার যুবক ছেলেধরা নয় পেশাদার ছিনতাইকারী বলে জানা গেছে। এ দিকে ছেলে ধরা সন্দেহে চার যুবককে পিকআপ ভ্যানে আগুন ও পিকআপ ভ্যান ছিনতাইয়ের ঘটনায় পৃথকভাবে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই দুটি মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ১৭ জনকে গ্রেফতার করলেও মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) পর্যন্ত ১৩ জনকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
জানা গেছে, ছেলে ধরা সন্দেহে আটককৃত গাবতলীর কর্ণিপাড়া গ্রামের হযরত আলী প্রাংয়ের ছেলে ফাহিম প্রাং (২৪), পারধুনট মধ্যপাড়া গ্রামের আব্দুল রশিদের ছেলে লুৎফর রহমান (৩৫), ধুনট জোড়শিমুল গ্রামের নজির হোসেনের ছেলে দুলাল হোসেন (২২) ও তার ভাই নিয়ামুল হোসেনের (৩৬) বিরুদ্ধে পিকআপ ভ্যান ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদী হয়েছেন রুপগঞ্জ উপজেলার নারিন্দা গ্রামের আসাদ মিয়ার ছেলে পিকআপ ভ্যানের মালিক মুসা মিয়া।
মুসা মিয়া স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, গত ২১ জুলাই ভাড়াটিয়া ওই চার যুবক ঢাকার আব্দুল্লাহপুর থেকে একটি ওয়ারড্রোব নিয়ে রংপুরের মিঠাপুকুর যাওয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়। পথিমধ্যে ওইদিন রাতে সিরাজগঞ্জ এলাকায় এসে ভাড়াটিয়া যুবকেরা পিকআপ চালক সাকিলকে (৩০) চাকুর মুখে জিম্মি করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর থেকে ভাড়াটিয়া চার যুবক গাড়ির মালিকের কাছ থেকে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল।
একপর্যায়ে গত সোমবার গাবতলীর দূর্গাহাটা ইউনিয়নের বটিয়াভাঙ্গা ৪ মাথার মোড়ে পিকআপ ভ্যান নিয়ে মুক্তিপণের টাকা পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছিল। স্থানীয় লোকজন তখন ওই ৪ জনকে ছেলেধরা সন্দেহে আটক করে গণপিটুনি শুরু করে। এরপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মিঠু ওই চার যুবককে উদ্ধার করে ইউনিয়ন পরিষদ রুমে আটকে রাখে। পরে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লাঠিচার্জ করে ১৩ জনকে আটক করে এবং আটককৃত ওই চার যুবককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
গ্রেফতারকৃত বাকি ১৩ জন হলেন- ঘেতা সরকার (৫৪), লিটন (৩৫), আক্কাস আলী (৪৫), মামুন সরকার (৩০), জেমন্স জয় (১৯), জাকির হোসেন (২২), আইয়ুব হোসেন (৩০), সুমন বাবু (১৯), মাইদুল (৩৩), জিম বাবু (২০), জহুরুল সরকার (৪০), রাব্বি (২০) ও জনি (২০)। গ্রেফতারকৃত এই ১৩ জনসহ ২২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১ হাজার থেকে ১২শ জনের বিরুদ্ধে জনতা কর্তৃক সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানার এসআই সুজাউদৌলা বাদী হয়ে মঙ্গলবার একটি মামলা দায়ের করেন।
গাবতলী থানার ওসি সেলিম হোসেন বলেন, সরকারি কাজে বাধা ও আইন হাতে তুলে নিয়ে চার যুবককে গণপিটুনি ও পিকআপ ভ্যান পুড়িয়ে দেওয়ায় ১৩ জনকে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তবে ছেলে ধরা সন্দেহে যে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে এরা প্রকৃত ছিনতাইকারী। এদের বিরুদ্ধে পিকআপ ভ্যানের মালিক বাদী হয়ে পিকআপ ছিনতাই ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড