হাসান আরেফিন, ঝালকাঠি প্রতিনিধি
চিকন সুতা ও বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি চাকার মতো ঘোরানো যায় তার নামই চাক জাল। দেখতে অনেকটা ‘বুচনা’ চাঁইয়ের মতো। স্থানীয় লোকজনের কাছে এটি টোনা জাল নামে পরিচিত। বর্ষা মৌসুমে জেলার বিভিন্ন হাটবাজারে এ জালের বেচা-কেনা হয়। ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার বাগড়ি হাট প্রতি সপ্তাহের রবি ও বৃহস্পতিবার মঠবাড়ি ইউপি ভূমি অফিসের সামনে সুতা, বাঁশের কঞ্চির তৈরি চাক জালের হাট বসে। প্রতিটি জাল আকারভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।
চাক জালের কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগে বর্ষাকালে ধানক্ষেত ও নালায় বাঁশের তৈরি চাঁই পেতে মাছ ধরা হতো। এক দশক ধরে উপকূলীয় এলাকায় বাঁশের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁইয়ের উৎপাদন খরচ কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। তাছাড়া বাঁশের সঙ্কটও রয়েছে। অন্যদিকে চাক জাল তৈরিতে খরচ কম। জাল তৈরির কাঁচামাল সহজে পাওয়া যায়। তাই বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চাক জাল। এটি দেখতে বুচনা চাঁইয়ের মতো। শুধু বাঁশের পরিবর্তে সুতার জাল ব্যবহার করা হয়। সাধারণত চিংড়ি মাছ ধরার জন্য কৃষক ও মৌসুমি জেলেদের কাছে চাক জালের চাহিদা বেশি হওয়ায় জনপ্রিয়তা বাড়ছে।
কয়েকশ পরিবার বর্ষা মৌসুমে চাক জাল তৈরি করে বাড়তি আয় করছে। অবসর সময়ে নারী ও পুরুষেরা ঘরে বসে চাক জাল তৈরি করেন। একজন প্রতিদিন দুই থেকে তিনটি জাল তৈরি করতে পারেন।
পোনাবলিয়া গ্রামের দুলাল মুনশি বলেন, প্রতিদিন তারা কৃষিকাজের অবসরে চাক জাল তৈরি করেন। ঘরে বসে নারীরাও চাক জাল তৈরি করেন। ঝালকাঠি শহরের টাউনহলের সামনে প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবার জাল নিয়ে যান তিনি। বড় চাক জাল ৪০০-৫০০ টাকা এবং ছোট চাক জাল ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। খরচ বাদে প্রতিটিতে ৮০-১০০ টাকা লাভ থাকে।
চাক জালের আরেক কারিগর শাহাদাৎ হোসেন বলেন, বাঁশের তৈরি চাঁইয়ের ব্যবহার কমে যাওয়ায় জেলেরা চাক জালের দিকে ঝুঁকেছেন।
জাল কিনতে আসা জেলে কামাল হোসেন বলেন, চাক জাল দিয়ে শুধু চিংড়ি মাছ ধরা হয়। বর্ষা মৌসুমে ধানক্ষেতে ও ছোট নালায় প্রচুর চিংড়ি মাছ পাওয়া যায়। চিংড়ি মাছ ধরার জন্য চাক জালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ভান্ডারিয়া থেকে ঝালকাঠিতে বিক্রি করতে আসা চাক জাল ব্যবসায়ী আব্দুল করিম জানান, বাজার থেকে চিকন সুতার জাল কিনে কেটে বিশেষ প্রক্রিয়ায় বাঁশের কঞ্চির সঙ্গে বেঁধে জাল তৈরি করি। শুধু ঝালকাঠি নয়, রাজাপুর, কাঠালিয়া, কাউখালী ও ভান্ডারিয়ায় এ জাল বিক্রি করি। এ দিয়ে সংসার চলে।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড