বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ার সোনাতলায় বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আরও চারটি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বন্যা কবলিত এলাকার লোকজনের হাতে কাজ নেই, পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাবে মানুষ কষ্ট অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
অপরদিকে সাঘাটা উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে শুরু করে সারিয়াকান্দি উপজেলার সীমান্ত পর্যন্ত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া প্রায় দেড় হাজার পরিবারের শিশুদের মধ্যে রবিবার (২১ জুলাই) শিশু খাদ্য দুধ ও পাউরুটি বিতরণ করা হয়।
গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ কাটাখালি নদীর বউ বাজার এলাকায় বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় সোনাতলায় বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে সোনাতলা পৌরসভা, সদর ইউনিয়ন, মধুপুর, বালুয়াহাট, জোড়গাছা, পাকুলা ও তেকানীচুকাইনগর ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
মধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান অসীম কুমার জৈন নতুন জানান, এক রাতে তার ইউনিয়নের ৫ হাজার ৩শ পরিবারের মধ্যে প্রায় তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এলাকার বিভিন্ন রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এমনকি বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সোনাতলা পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের পুরোটাই বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।
এদিকে বন্যার পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ওই এলাকার নিম্ন আয়ের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ফলে তাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে দুবেলা দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি, জ্বালানি ও শৌচাগারের অভাবে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদ আহমেদ জানান, বাঙালী নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মিনহাদুজ্জামান লীটনের উদ্যোগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেওয়া পরিবারের দুই বছর বয়স থেকে ছয় বছর বয়সী শিশুদের জন্য শিশু খাদ্য দুধ ও পাউরুটি বিতরণ করা হয়েছে।
বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, রবিবার যমুনা নদীতে ৮৩ সেন্টিমিটার এবং বাঙালী নদীতে বিপদসীমার ৫০ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে কয়েকটি মেডিকেল টিম সার্বক্ষনিক কাজ করছে বলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানান।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিস সূত্রে জানা গেছে, বন্যার্তদের বিশুদ্ধ পানির জন্য ডুবে যাওয়া টিউবওয়েলগুলো উচুকরণের ব্যবস্থার পাশাপাশি নতুন করে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে।
বগুড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুজ্জামান জানান, গত এক সপ্তাহে এক লাখ ৮৫০ পিস পানি বিশুদ্ধ করণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
সোনাতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুর আলম জানান, বন্যার্তদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত আছে। এছাড়াও পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুদ রয়েছে।
ওডি/এএসএল
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড