অধিকার ডেস্ক
‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ নামে সক্রিয় চার সদস্যের অজ্ঞান পার্টির একটি চক্র। এ চক্রটির হাতে গেল ১০ বছরে সর্বস্বান্ত হতে হয়েছে অন্তত ৮শ সাধারণ মানুষকে।
শনিবার (২০ জুলাই) অজ্ঞান পার্টির চার সদস্যকে গ্রেফতার করার পর এসব তথ্য জানিয়েছে পুলিশ।
সম্প্রতি এক ব্যক্তি অজ্ঞান পার্টির কবলে পড়ে সব কিছু হারানোর ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে এ চক্রের খোঁজ পায় কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম।
বিষয়টি নিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, অজ্ঞান করে ছিনতাইয়ের ধারণাটি এ চক্রই প্রথম বন্দর নগরী চট্টগ্রামে দেখায়। তাদের হাত ধরেই পরবর্তীতে অজ্ঞান পার্টির আরও চক্র তৈরি হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চুন্নু (৩৬), মো. জসিম (৩২), নুর ইসলাম (৩৫) ও মো. আকবর (৩৫)। তাদের প্রত্যেকের বাড়ি ভোলার লালমোহন এলাকায়।
চক্রটির সদস্যদের গ্রেফতারের পর সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) নোবেল চাকমা জানান, অজ্ঞান পার্টির চারজন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে অজ্ঞান করার বিভিন্ন ওষুধ, ওষুধ মেশানো জুস ও মলম উদ্ধার করা হয়েছে।
জব্দকৃত জুস, বিস্কুট ও ঔষধ
সম্প্রতি নগরে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য বেড়ে যাওয়ায় সিএমপি কমিশনারের নির্দেশে একটি টিম গঠন করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ দিনের চেষ্টায় শুক্রবার (১৯ জুলাই) বিকালে টাইগারপাস মোড় থেকে চুন্নু ও আকবরকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যে স্টেশন রোড এলাকা থেকে এ চক্রের বাকি দুই সদস্য জসিম ও নুর ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
চক্রের সদস্যরা ‘ভোলাইয়া গ্রুপ’ নামে পরিচিত উল্লেখ করে পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, তারা চট্টগ্রাম মহানগরের বিভিন্ন রুট, ঢাকা, কক্সবাজার, নোয়াখালী, বগুড়া, গাইবান্ধা, রংপুরসহ বিভিন্ন রুটের বাসে যাত্রীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়।
যেভাবে লোকদের সর্বস্বান্ত করে তারা
এ ব্যাপারে কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, যাত্রীবাহী বাসে যাত্রী হিসাবে উঠে প্রথমে টার্গেট করে। পরে সেই যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে অবস্থা বুঝে নেয়। এরপর টার্গেট কনফার্ম হলে অন্য সদস্যদের চোখে ইশারা বা মোবাইলের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়।
মো. কামরুজ্জামান আরও বলেন, টার্গেট করা যাত্রীর কাছে আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের জন্য নিজেরা ব্যাগ থেকে বের করে শুরুতে বিস্কুট, চিপস এসব খায়। পরে টার্গেটকৃত যাত্রীকে খাওয়ায়। ব্যাগ থেকে জুস বের করে প্রথমে নিজে অর্ধেক খেয়ে ফেলে। পরে যাত্রীকে দেওয়ার সময় কৌশলে জুসে ওষুধ মিশিয়ে দেয়। সেই যাত্রীর সবকিছু নিয়ে বাস থেকে নেমে পড়ে এ চক্রের সদস্যরা। গেল ১০ বছরে মাত্র দুবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলেও জামিনে ছাড়া পেয়ে তারা আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসীন, অভিযান পরিচালনাকারী টিমের সদস্য এসআই সজল দাশসহ কর্মকর্তারা।
ওডি/এএস
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড