বরগুনা প্রতিনিধি
আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। শুক্রবার (১৯ জুলাই) বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।
শুক্রবার মিন্নিকে আদালতে হাজির করার সংবাদে আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিক ও উৎসুক মানুষ ভিড় জমান। মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরও আদালত প্রাঙ্গণে ছিলেন।
এসময় কান্না জড়িত কণ্ঠে মোজাম্মেল হোসেন বলেন, আমার মেয়েকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সাজানো জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। হত্যার ঘটনার সঙ্গে মিন্নি কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমার মেয়ে তার স্বামীকে বাঁচাতে জীবন বাজি রেখে চেষ্টা করেছে। এটাই কি মিন্নির অপরাধ?
এরপর তিনি বরগুনা-১ আসনের এমপির ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর দিকে অভিযোগের তীর তাক করেন। তিনি বলেন, এসব কিছুই শম্ভু বাবুর খেলা। তার ছেলে সুনাম দেবনাথকে বাঁচাতে আমার মেয়েকে বলি দেওয়া হচ্ছে।
আদালত থেকে বের করে ছোট পিকআপে তোলার সময় মিন্নি কিছু একটা বলতে চেয়েছিলেন। এ সময় পাশে থাকা পুলিশের নারী সদস্য তার মুখ চেপে ধরেন। যার কারণে মিন্নি কিছু বলতে চাইলেও বলতে পারেননি।
এসময় মিন্নির বাবা বলেন, মিন্নি মা..., মিডিয়ার সঙ্গে কথা বল। তোকে নির্যাতন করা হয়েছে, আপনারা (পুলিশ) ওরে কথা বলতে দিন। আমার মেয়েকে জোর করে স্বীকারোক্তি নেওয়া হয়েছে। আমার মেয়ে অসুস্থ, প্লিজ ওকে নির্যাতন করবেন না।
তিনি চিৎকার করে আরও অভিযোগ করেন, আমার মেয়ে অসুস্থ। গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাতে একজন পুলিশ সদস্য বাসায় এসে মিন্নির চিকিৎসাপত্র নিয়ে গেছেন। আর আজ আচমকা তাকে আদালতে হাজির করা হলো।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা থেকে আইনজীবীরা আসবেন শুনে পুলিশ নির্যাতন করে তড়িঘড়ি মিন্নিকে দিয়ে মিথ্যা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছে। আমি আইনি লড়াই করে সত্য বের করব ইনশাল্লাহ।
মিন্নির বাবার গুরুতর অভিযোগের স্থানীয় এমপি শম্ভু দেবনাথের ছেলে সুনার বলেন, আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা কী বলেছে, সেটা আমার জানা নেই। এ ধরনের অভিযোগ মিথ্যা ও অমূলক। এ ব্যাপারে আমি বা আমার পরিবারকে পেঁচিয়ে মন্তব্য করা মূর্খ লোকের কাজ। তবে আমার যা মনে হচ্ছে, আমাদের বিরোধী চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
বরগুনা সরকারি কলেজের মূল ফটকের সামনের রাস্তায় ২৬ জুন সকাল ১০টার দিকে স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির সামনে কুপিয়ে জখম করা হয় রিফাত শরীফকে। বিকাল ৪টায় বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
১৩ জুলাই রাতে রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১৮ দিন পর রিফাতের বাবা বরগুনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে মিন্নির গ্রেফতার দাবি করেন। রিফাতের বাবার অভিযোগের ফলে আলোচিত এই হত্যা মামলা নাটকীয় মোড় নেয়।
রিফাত হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত ছয় আসামিসহ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, চারজন রিমান্ডে আছে।
ওডি/এমআর
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড