সাদ্দাম হোসেন, পূর্বধলা, নেত্রকোণা
নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার গ্রামগুলোতে সর্বত্রই এখন শুধু ছেলে, ‘গলাকাটা’ আতঙ্ক বিরাজ করছে। আতঙ্কে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কমে গেছে ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিতি। ভয়ে বাবা-মা সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানোর সাহসও পর্যন্ত পাচ্ছে না।
পূর্বধলার যেদিকে কান যায়, শুধু শোনা যায় ছেলে-ধরা, কল্লা কাটা গুজব। কিন্তু কখন, কিভাবে, কার ছেলে নিয়ে গেছে, মাথা কেটেছে তা এখনো পর্যন্ত কেউ জানাতে পারেননি। এ বিষয়েও কোনো অভিভাবকই সঠিক উত্তর দিতে পারেননি, শুধু লোকমুখে শোনা কথা বলে নিজেদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছেন। বাস্তবে কোনো ছেলে-ধরার ও মাথা কাটার সন্ধান মেলেনি। তবে মাথা কাটা সম্পর্কে প্রায় সবখানেই গুঞ্জন রটেই যাচ্ছে।
সর্বশেষ শুক্রবার দিবাগত (১৯ জুলাই) রাত ১২টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুকুরিয়াকান্দা, নয়াপাড়া ও বামনডহর ছোছাউড়া, খারছাইল, বিশকাকুনী ইউনিয়নের বিশকাকুনী, ঘাগড়া ইউনিয়নের পানিশানা গ্রামসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে গলাকাটা আতঙ্ক ছড়ায়।
জানা গেছে, পুকুরিয়াকান্দা গ্রামে পাঁচ জন অপরিচিত লোকের আনাগোনা দেখা যায়। স্থানীয় এলাকাবাসী মাথা কাটার লোক সন্দেহে লাঠি সোটা নিয়ে ধাওয়া করলে ওরা পালিয়ে যায়। তখন থেকে এলাকাবাসী সারারাত পাহারা অব্যহত রাখে। অন্যান্য গ্রামগুলোতেও এ ধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় রাতেই থানার পুলিশ পুকুরিয়াকান্দা গ্রাম পরিদর্শন করে সবাইকে সচেতন থাকতে পরামর্শ দেন এবং সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি ধরা পরলে তাকে যেন মারধর না করে ববং পুলিশের কাছে সৌপর্দ করতে আহ্বান জানান।
নেত্রকোণা পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার চৌধুরী শুক্রবার (১৯ জুলাই) প্রেস কনফরেন্সে এই বিষয় নিয়ে কাউকে বিভ্রান্ত বা আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন নতুন করে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ধরনের গুজবে কান দিয়ে কোনো পোস্ট বা শেয়ার করবেন না, নিজে বিভ্রান্ত হবেন না, আর অপর কাউকে অকারণে ভয় দেখিয়ে বিভ্রান্ত করবেন না, আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না। তবে আপনি অস্বাভাবিক কিছু দেখলেই আগে থানায় ফোন করুন আর তাদের বিস্তারিত জানান। যা করার পুলিশ প্রশাসনই করবে।
পূর্বধলা থানা অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ তৌহিদুর রহমান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনগড়া ও অসত্য তথ্য দিয়ে প্রচারণা চালানো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপরাধ। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলে ধরা ও পদ্মা সেতুর গুজবের সঙ্গে মিশিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার করা হচ্ছে যা নিতান্তই বিভ্রান্তিমূলক ও অসত্য।
তিনি আরো জানান, সবাই সচেতন থাকবেন। অযথা কেউ বিভ্রান্ত হবেন না। আমরা আপনাদের পাশে আছি।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড