ফরিদপুর প্রতিনিধি
ফরিদপুরে পদ্মাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৫০টি গ্রাম তলিয়ে গেছে পানিতে। এতে প্রায় ৩০ হাজারের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকার ধান, পাট ও ভুট্টাসহ ফসলের ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
এ দিকে পদ্মা নদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টে গত ১২ ঘণ্টায় ৯ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় শহরে পানির প্রবেশদ্বার মদনখালি রেগুলেটরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকারি ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার ইদ্রিস আলী জানান, গোয়ালন্দ পয়েন্টে শুক্রবার সকাল ৬টায় পানির রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক এক মিটার। যা বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ফরিদপুর সদরের নর্থ চ্যানেল, ডিগ্রীরচর, চরমাধবদিয়া ও আলিয়াবাদ ইউনিয়ন, চরভদ্রাসন উপজেলার চর ঝাউকান্দা, হাজিগঞ্জ, চর হরিরামপুর ও গাজিরটেক ইউনিয়ন এবং সদরপুর উপজেলার চর নাসিরপুর, দিয়ারা নারিকেলবাড়িয়া, ঢেউখালী ও চরমানাইর ইউনিয়ন পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এই ১২টি ইউনিয়নের ৫০টি গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। এতে ওইসব এলাকার রাস্তাঘাট, ফসলি জমি ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। কয়েক হাজার ফসলি জমি ও ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
পাশাপাশি গত দুদিনে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙনে সদরপুর উপজেলায় ৪৫টি এবং ভাঙ্গা উপজেলায় ১৫টি বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুর্গত এলাকার জন্য বরাদ্দকৃত ত্রাণ এখনো অনেক এলাকায় পৌঁছায়নি। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে চলছে নতুন তালিকা প্রণয়নের কাজ।
এ দিকে গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। এসব এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থাও দুর্বল হয়ে পড়েছে। বন্যাকবলিত চরাঞ্চলে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। সেখানে বাসাবাড়ির মালামালের সঙ্গে চুরি হচ্ছে দরিদ্র পরিবারের গরু ও বাছুর। সবমিলিয়ে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা নিয়ে দুর্গম চরের মানুষ নিদারুণ ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ফরিদপুরের নর্থচ্যানেল ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মো. তুহিন জানান, দুর্গত এলাকায় যত দ্রুত সম্ভব ত্রাণ পৌঁছানোর ব্যবস্থা নিয়েছি। শুক্রবারেও নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে দুর্গতদের তালিকা করছি। বন্যা কবলিত সবার মধ্যেই ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হবে।
ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ জানান, শহরের মদনখালী রেগুলেটরের ঝুঁকিপূর্ণ দুটি গেট নতুন করে প্রতিস্থাপন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রবল কবলিত এলাকা চিহ্নিত করে দ্রুততার সঙ্গে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ফরিদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রোখসানা রহমান জানান, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দুর্গত এলাকার জন্য ৪২ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। দুর্গতদের জন্য চারটি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এছাড়া ৯২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
ওডি/এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড