• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

তীব্র স্রোত ও ফেরি সঙ্কটে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় অচলাবস্থা

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

১৯ জুলাই ২০১৯, ১৩:৫২
জানজট
নদী পারের অপেক্ষায় আটকে পড়া যানবাহন ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশ দ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে নৌযান চলাচলে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। প্রচণ্ড স্রোতের বিপরীতে ফেরিগুলো চলছে খুবই ধীরে ধীরে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে তীব্র ফেরি সংকট।

তীব্র স্রোতে চারটি ফেরি চলাচল করতে না পারায় সেগুলো বসিয়ে রাখা হয়েছে। যান্ত্রিক সমস্যায় সংস্কারে আছে রুটের পাঁচটি ফেরি। এতে করে ফেরি সঙ্কটও দেখা দিয়েছে প্রকট আকারে। গত কয়েক দিন ধরে এ রুটে যানবাহন পারাপার চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। উভয় ঘাটে নদী পারের অপেক্ষায় আটকে পড়ছে সহস্রাধিক যানবাহন।

শুক্রবার (১৯ জুলাই) সকালে ১১টা নাগাদ দৌলতদিয়া ঘাট থেকে গোয়ালন্দ রেলগেট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার জুড়ে মহাসড়কে সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। এতে আটকে পড়েছে সহস্রাধিক যানবাহন। আটকে পড়া যাত্রী ও চালকরা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তিন/চার দিনেও নদী পার হতে পারছে না অপচনশীল পণ্যবাহী যানবাহন। এছাড়া দুদিন ধরে আটকে থেকে কয়েকশ কাঁচামালবাহী ট্রাকের পণ্য পচতে ও পাকতে শুরু করেছে। পাটুরিয়া ঘাটেও একই অবস্থা বিরাজ করছে।

সূত্র মতে, তীব্র স্রোতের কারণে আগে থেকেই বন্ধ হয়ে আছে রোরো ফেরি খানজাহান আলী ও ইউটিলিটি ফেরি শাপলা-শালুক। এছাড়া রুটের পাঁচটি ফেরি প্রায় এক মাস ধরে সংস্কারে আছে নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ডে। বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত এ রুটে সচল ছিল মাত্র ১১টি ফেরি। কিন্তু ফেরিগুলোর নদী পার হতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে দুই থেকে তিন গুণ সময় বেশি লাগছে।

দৌলতদিয়া ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে গোয়ালন্দ রেলগেট পর্যন্ত প্রায় সাত কিলোমিটার জুড়ে যানবাহনের দীর্ঘ সারি সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে দুই/তিন সারির সৃষ্টি হয়ে যান চলাচল একেবারে ধীরগতি হয়ে গেছে। সড়কে আটকে আছে সহস্রাধিক বিভিন্ন যানবাহন।

এ সময় একাধিক বাস চালক অভিযোগ করেন, তীব্র গরমের মধ্যে দীর্ঘ সময় সিরিয়ালে আটকা থেকে অনেক যাত্রীই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। কিন্তু এরকম দুর্ভোগের মধ্যে যাত্রীবাহী যানবাহনের সঙ্গে দালালদের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে অনেক পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অন্তত পাঁচ শতাধিক অপচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান গত দুই-তিন দিন ধরে ঘাট এলাকায় আটকে থেকে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে।

বরিশাল থেকে আসা ঈগল পরিবহনের চালক মিরাজ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে দৌলতদিয়া আসি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দীর্ঘ সিরিয়ালে আটকে আছি। যাত্রী ও তারা সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। তবে কিছু কিছু যাত্রী লঞ্চ ও ফেরিতে নদী পার হয়ে গেছেন।

যশোর থেকে আসা কলা, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচবোঝাই ট্রাক চালক নুরুদ্দিন, সুমন হোসেন, বিল্লাল মিয়াসহ কয়েকজন জানান, দুদিন ধরে মহাসড়কেই দাঁড়িয়ে আছি। প্রচণ্ড রোদ ও গরমে কাঁচা পণ্যগুলো পাকতে ও পঁচতে শুরু করেছে। দ্রুত পণ্যগুলো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে ব্যাপক ক্ষতি হবে।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া অফিসের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ রনি জানান, এই রুটে চলাচলকারী ১৫টি ফেরির মধ্যে তীব্র স্রোতের কারণে চারটি ফেরি চলাচল করতে পারছে না। অন্য ফেরিগুলো ট্রিপে অতিরিক্ত সময় লাগায় ঘাট এলাকায় যানবাহনের সিরিয়ালের সৃষ্টি হয়েছে। তবে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে যাত্রীবাহী যানবাহনগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। এভাবে ফেরি সার্ভিস চালু রাখা আমাদের জন্য খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। উভয় পাড়ে অসংখ্য গাড়ি আটকে পড়ে যাত্রী, চালকসহ সংশ্লিষ্ট সকলে প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃতির ওপর আমাদের কারও হাত নেই।

পণ্যবাহী ট্রাক পারাপার বিষয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পচনশীল পণ্যবাহী কিছু ট্রাক বাসের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে। মেরামতে থাকা রুটের পাঁচটি ফেরি আগামী সপ্তাহে রুটে যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

ওডি/ এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড