রাজু আহমেদ, রাজশাহী
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় রাজশাহীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগেভাগেই প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। শুনতে মহাযজ্ঞ শোনালেও প্রস্তুতির নমুনা বলছে পরিবেশ মোটেও ডেঙ্গু পরিস্থতি মোকাবিলার মতো নয়।
হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য মতে, ১৭ নম্বর কেবিনে তিনটি বেড নিয়ে খোলা হয়েছে পৃথক ডেঙ্গু কর্নার। সেই সঙ্গে সেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসক ও নার্সদের নিয়ে গঠন করা হয়েছে পৃথক টিম।
তবে অভিযোগ উঠেছে, সেই কেবিনটির পরিবেশ অস্বাস্থ্যকর, চিকিৎসকদের দেখা নেই, প্রয়োজনে ডেকেও সাড়া মিলছেনা নার্সদের।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বেলা ১১টার পর আরএমসি হাসপাতাল ভবনের তিন তলায় অবস্থিত ১৭ নম্বর কেবিনটিতে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণের জানালা দিয়ে পানি এসে মেঝেতে থই থই করছে। জানালা বন্ধ করেও সেই পানি প্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। বৃষ্টি ছাড়াই ছাদ দিয়ে সবসমই পড়ছে পানি। প্রবেশ দরজার পাশেই মিস্ত্রী মেশিন দিয়ে ইট-টাইলস কাটছে। তার ধুলো কেবিনে ঢুকছে। পাশের কেবিনগুলোতে চলছে নির্মাণ কাজ। দিনভর হাতুর-বাটাল ও মিস্ত্রীদের চিৎকার চেচামেচি। ডেঙ্গু কর্নারের ছোট্ট কেবিনটিতে তিনটি বেড রাখা হয়েছে। তিনটিতেই রোগী আছে। দুপুর একটার পার পুনরায় কেবিনটিতে গেলে দেখা যায় একই চিত্র।
কেবিনে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা (ছবি- দৈনিক অধিকার)
কেবিনটিতে থাকা ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের দুইজন থাকেন ঢাকায়, অপর একজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ছাত্র। তিনজনই জানান, তারা ঢাকায় থাকা অবসস্থায় অসুস্থ হয়। পরে রাজশাহীতে আসার পর শরীরের অবস্থা আরও অবনতি হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
কেবিনে থাকা রোগী ও তাদের স্বজনরা অভিযোগ করে জানান, বৃষ্টি নাই তবুও জানালা দিয়ে কেবিনে পানি ঢুকছে। সম্ভবত ছাদের কোনো পাইপ ফেটে গেছে। সেই পনিতে কেবিনের মেঝে থই থই করছে। নার্সদের কয়েকবার জানিয়ে আসা হয়েছে। তারা বলছে দেখছি।
তারা আরও অভিযোগ করে বলেন, ২৪ ঘণ্টায় মাত্র একবার ডাক্তার আসে রোগী দেখতে। এর পর আর কোনো সাড়া নেই। এর মাঝে রোগীর কোনো সমস্যা হলে নার্সদের রুমে গিয়ে তাদের ডাকলে তারা চোখ রাঙানি দেয়। নার্সরা উল্টো বলেন, আপনি বল্লেইতো আর যাওয়া যাবে না। আমাদের নিয়ম আছে সেই নিয়ম অনুসারেই কাজ করব।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম জানান, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা পৃথক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তিনটি বেড নিয়ে আপাতত শুরু করা হয়েছে ডেঙ্গু কর্নার। প্রয়োজনে সেখানে আরও দুইটি বেড বৃদ্ধি করা হবে। সেই সঙ্গে হাসপাতালে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে ডেঙ্গু কর্নারে তিনজন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে ধারণা করা হচ্ছে সকলেই ঢাকা থেকে রোগটির জীবাণু বহন করে নিয়ে এসেছেন।
ডেঙ্গু কর্নার কেবিনের দুরাবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নার্সরা সার্বক্ষণিক রোগীদের খেয়াল রাখছেন। কেবিনে পানি প্রবেশের বিষয়টি জানা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড