শাকিল মুরাদ, শেরপুর
অবিরাম বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের পাঁচ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ভেসে উঠতে শুরু করেছে বন্যার ক্ষতির ক্ষত।
বুধবার (১৭ জুলাই) সকাল থেকে প্লাবিত এলাকার পানি নামতে শুরু করেছে। তবে এখনো পানিবন্দি রয়েছে অনেক পরিবার। পাহাড়ি ঢলের তোড়ে জেলার বিভিন্ন উপজেলার কয়েকটি আঞ্চলিক সড়ক ও গ্রামীণ রাস্তাঘাটের ক্ষতি হয়েছে। শুধু রাস্তাঘাটই নয় রোপা আমন ধানের বীজতলা, সবজিসহ ভেসে উঠছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পাহাড়ি ঢলের পানির প্রবল তোড়ে মহারশি নদীর তীরবর্তী বাঁধ ও উপজেলার সাথে সংযোগ স্থাপনকারী দিঘিরপাড় এলাকার সড়কে ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে গেছে। এতে এই সড়কে এলাকাবাসীর যাতায়াত বন্ধ রয়েছে। একই উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর তীরবর্তী বাঁধ ভেঙে হাতিবান্ধা ইউনিয়নের সঙ্গে উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় দিঘিরপাড়, সুরিহারা, কালিনগর, সারিকালিনগর, দড়িকালিনগর, বালিয়াগাঁও, কোনাগাঁও ও জরাকুড়া গ্রামের গ্রামীণ সড়কগুলো এখনো পানিতে তলিয়ে আছে।
সোমেশ্বরী নদীর পানির প্রবল তোড়ে নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, মাঝাপাড়া ও বাগেরভিটা গ্রামের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। যে কারণে ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ধানশাইল-বাগেরভিটা-ভটপুর সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সড়কের অধিকাংশ স্থানে ভেঙে গেছে এবং পিচ ওঠে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বাগেরভিটা এলাকায় সোমেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ১০০ ফুট দীর্ঘ সেতুটির দু’পাশের মাটি সরে গেছে। ফলে সেতুটি এখন হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে এবং এলাকাবাসী ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
উপজেলার মরিচপুরান এলাকায় দুটি স্থানে ভোগাই নদীর সাড়ে ৬০০ ফুট বাঁধ ভেঙে সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে সড়ক ডুবে গেছে এবং বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করায় গত তিনদিন যাবত সাত গ্রামের মানুষ কষ্টের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় আকবর হোসেন, মতিউর রহমান ও আব্দুর রহমান বলেন, নালিতাবাড়ীর উত্তর কুন্নগন রাজারখালপাড় এলাকায় ভোগাই নদীর ২০০ফুট বাঁধ ও ফকিরপাড়া চেয়ারম্যানের বাড়ির পেছনে ভোগাই নদীর সাড়ে ৪০০ ফুট বাঁধ ভেঙে গেছে। যাতায়াতের সড়কে পানি থাকায় এলাকাবাসি ঠিকমত চলাচল করতে পারছেন না।
জেগে উঠছে বীজতলা (ছবি- দৈনিক অধিকার)
মরিচপুরান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খন্দকার শফিক আহমেদ বলেন, দুটি অংশে সাড়ে ৬০০ ফুট ভোগাই নদীর বাঁধ ভেঙে গেছে। ভাঙণ অংশ দিয়ে পানি প্রবেশ করায় সড়কসহ সাতটি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি কমলেই বাঁধ সংস্কারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
নকলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদুর রহমান বলেন, ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ বলেন, বুধবার সকাল থেকে পানি কমতে শুরু করেছে। আমরা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন শেষে বিস্তারিত বলা যাবে কেমন ক্ষতি হয়েছে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড