• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

দেড় কোটি টাকার ব্রিজ ২২ লাখ টাকায় বিক্রি

  সিলেট প্রতিনিধি

১৭ জুলাই ২০১৯, ১৩:৩৫
সিলেট
১ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় নির্মিত ফুটওভার ব্রিজ এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২২ লাখ টাকায়

সিলেট সিটি করপোরেশনের অপরিকল্পিত ভাবে ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকায় নির্মিত ফুটওভার ব্রিজ এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২২ লাখ টাকায়। ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের চার বছরের মাথায় এটি বিক্রির সিদ্ধান্তে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। অপ্রয়োজনীয় স্থানে নির্মাণের ফলে এটি স্থাপনের শুরু থেকে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে।

সিলেটের প্রথম পথচারী ব্রিজটি স্থাপনকালেই আপত্তি উঠেছিলো। প্রশ্ন উঠেছিলো এর প্রয়োজনীয়তা নিয়ে। তবু সিলেট নগরীর কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় অপরিকল্পিতভাবে স্থাপন করা হয় পথচারী ফুটওভার ব্রিজটি। অপরিকল্পিত ভাবে স্থাপিত এ ফুটওভার ব্রিজটি বিক্রি না করে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ হুমায়ুন রশীদ চত্বরে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন নগরবাসী।

স্থাপনের পর থেকেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে এটি। মাঝখানে এটি দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত হয়। তবে স্থাপনের চার বছর পর এবার সিলেটের প্রথম এই পথচারী ব্রিজটি বিক্রি করে দিচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশন। তাও বিক্রি হচ্ছে নামমাত্র মূল্যে। প্রায় দেড় কোটি টাকার ফুটওভার ব্রিজ বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে মাত্র ২২ লাখ টাকায়।

সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্থানান্তরে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে তাই বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এই পথচারী ব্রিজটি। অনেকটা অপরিকল্পিত ভাবে ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ঘোষণা দেন এই পথচারী ব্রিজটি নির্মাণের।

এ ঘোষণার সাত বছরের মাথায় যখন এটি বাস্তবায়ন শুরু হয়, তখন অনেকেই এই স্থানে পথচারী ব্রিজটি স্থাপন অপ্রয়োজনীয় মনে করে এ নিয়ে বিরোধিতা করেন। তবু প্রকল্পটি ‘অর্থমন্ত্রীর অগ্রাধিকার প্রকল্প’ হওয়ায় দ্রুত বাস্তবায়িত হয়।

‘ফুটওভারব্রিজ প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করা হয় বাংলাদেশ ইস্পাত অ্যান্ড প্রকৌশল করপোরেশনের নিজস্ব কোম্পানি ‘চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড’ এর মাধ্যমে। ১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ব্যয়ে এ পথচারী ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। ২০১৫ সালের ২১ মে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়। চার মাসের মাথায় নির্মাণকাজ শেষে এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর।

সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৮ জুলাই তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের উপস্থিতিতে মহানগরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড নিয়ে পর্যালোচনা সভায় পথচারী ব্রিজটি স্থানান্তর করে দক্ষিণ সুরমার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে স্থাপনের প্রস্তাব ওঠে।

পরবর্তীতে দেখা যায় স্থানান্তর করতে খরচ পরবে ৪০ লক্ষ টাকা। তাই এই পথচারী ব্রিজটি অপসারণের জন্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয় সিসিক। এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে গত ২০ জুন সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর নিলাম বিজ্ঞপ্তি দেয়।

৭ জুলাই ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। ওই দিন পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী দরদাতা প্রত্যাশিত না হওয়ায় নগরের কাজীরবাজার এলাকার ৭৫ জন ভাঙারি ব্যবসায়ীর সমন্বয়ে একটি ‘গ্রুপ’কে ২২ লাখ টাকায় ব্রিজটির সরঞ্জাম ক্রয়ের সুযোগ দেওয়া হয়।

কোটি টাকা মূল্যের এই সেতুটির বিক্রয় মূল্য নিয়ে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ও সিসিকের প্রকৌশল বিভাগের সংশ্লিষ্টরা নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তারা মনে করেন প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি স্থাপনার মূল্য অন্তত অর্ধেক হওয়া উচিত ছিল।

সিলেট টুরিস্ট ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহমদ বলেন, সিলেটের একমাত্র ফুটওভার ব্রিজটি বিক্রি না করে সিলেটের প্রবেশ দ্বার হুমায়ুন রশীদ চত্বরে স্থাপন করা উচিত। হুমায়ুন রশীদ চত্বর পয়েন্টটি সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ থাকে। এখানে পথচারী পারাপার হতে গিয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফুটওভার ব্রিজটি এখানে স্থানান্তর করা হলে পথচারীর উপকারে আসবে।

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, এই সেতুটি স্থানান্তর করা অনেক ব্যয়বহুল। বিক্রি করা হলে অন্তত কিছু টাকা পাওয়া যাবে। তাই এটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রীও অবগত আছেন। তবে কার কাছে কত টাকায় বিক্রি হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। পরবর্তীতে সভার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবগত করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ওডি/আরবি

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড