• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আশ্বাসেই ভাসছে কোটি টাকার সেতু

  শা‌কিল মুরাদ, ‌শেরপুর

১৫ জুলাই ২০১৯, ১৬:৫২
সেতু
পানিতে ডুবে আছে সেতুর দীর্ঘ সাড়ে তিন কিলোমিটার সংযোগ সড়ক (ছবি- দৈনিক অধিকার)

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এক সপ্তাহ ধরে পানিতে ডুবে আছে সেতুর দীর্ঘ সাড়ে তিন কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। ফলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি এখন ভাসছে পানিতে। গজারমারী নামে ওই সেতুটির শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে। উপজেলার কালিনগর গ্রামের এলজিইডির সড়ক থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ও সেতুর পশ্চিম পাশে বাগেরভিটা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এখন পানির নিচে।

সেতুটির এ চিত্র শুধু এবারই নয়, বর্ষা মৌসুম এলেই এমন চিত্র দেখা যায়। এ কারণে ওই পথে চলাচলকারী ১০টি গ্রামের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বর্ষার সময় ভোগান্তির শিকার হন। প্রত্যেক বর্ষা মৌসুমে এমন অবস্থার সৃষ্টি হলেও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ সেতুর সংযোগ সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। তবে উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন, অনুমোদন পেলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই সড়কটি সংস্কার করে পাকাকরণ করা হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঝিনাইগাতী সদর ও ধানশাইল ইউনিয়নের সীমানায় গজারমারী বিলের ওপর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অধীনে ২০০৪ সালে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে গজারমারী সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতুর দুই পাশে সাড়ে তিন কিলোমিটার কাঁচা ও নিচু সংযোগ সড়ক র্নির্মাণ করা হয়। সংযোগ সড়কসহ এই পথে সাত কিলোমিটার সড়কে মাটি ভরাট না করায় প্রতি বর্ষায় সড়কটি পানিতে ডুবে যায়। এ কারণে বর্ষায় ধানশাইল ইউনিয়ন ও পাশের শ্রীবরদী উপজেলা থেকে ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরে এ পথে চলাচলকারী ১০টি গ্রামের সাধারণ মানুষসহ শিক্ষার্থীদের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে নৌকা। প্রতিদিন নৌকায় পারাপার হতে গিয়ে তাদের নানা দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।

সেতুর সংযোগ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নৌকায় পারাপার হচ্ছেন স্থানীয়রা (ছবি- দৈনিক অধিকার)

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গজারমারী সেতুটির কাঁচা সংযোগ সড়ক পানিতে ডুবে আছে। ফলে সারিকালিনগর, বালুরচর, কালিনগর, নয়াপাড়া, দাড়িয়ারপাড়, কান্দুলী, কুচনিপাড়া, বাগেরভিটা ও কোনাগাঁও, বালিয়াগাঁও ১০টি গ্রামের প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে। উপজেলা সদরে যাতায়াতের জন্য ওইসব গ্রামের বাসিন্দাদের বেশি ভাড়ায় নৌকায় চলাচল করতে হচ্ছে।

নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক শাহেদ আলী বলেন, ‘অনেকদিন ধরে এলাকাসীদের পক্ষ থেকে এ রাস্তাটি সংস্কার দাবি করা হইতাছে। জন প্রতিনিধিরা আশ্বাস দেয় কিন্তু পরে আর কেউ আগাইয়া আসে না।’

কান্দুলী গ্রামের হান্নান বলেন, ‘এই সড়কটা মাটি দিয়া উঁচা (উঁচু) না করনে (করায়) ১০-১২ গ্রামের মানুষ প্রতিবছর সীমাহীন কষ্ট করে। সরকারের কাছে আমগর অনুরোধ, দয়া কইরা এই সড়কটা যেন ঠিক কইরা (করে) দেয়।’

ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়কটি উঁচু ও পাকাকরণ না করায় প্রতি বর্ষায় ওই পথে চলাচলকারীদের সীমাহীন কষ্ট করতে হয়। তবে ইউনিয়ন পরিষদের সামান্য অর্থ দিয়ে এই কাজ করা সম্ভব নয়। বিশেষ বরাদ্দ পাওয়া গেলে সড়ককটির স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব বলে জানান এ ইউপি চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ইতোমধ্যে গজারমারী সেতুটির পথে সাত কিলোমিটার সড়ক ময়মনসিংহ অঞ্চল পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের (এমআরআরআইডিপি) আওতায় প্রাক্কলন তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি এবার সড়কটি সংস্কার করা হবে।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড