মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় ধর্ষণের শিকার এক ছাত্রীকে স্কুলে যেতে নিষেধ করার অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় রবিবার (১৪ জুলাই) উপজেলার মেদিনীমন্ডল ইউনিয়নে উত্তর যশলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত না করার দায়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হারুন অর রশিদকে শোকজ করা হয়।
নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর মা জানান, গত ৮ জুলাই তার মেয়েকে ক্লাস থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে প্রধান শিক্ষক তাকে ডেকে নিয়ে মেয়েকে আর স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করেন। তবে তিনি মেয়েকে যদি মাদ্রাসায় পড়ান তাহলে তাকে ছাড়পত্র দেবেন বলে আশ্বাস দেন।
ওই অভিযুক্ত শিক্ষককে ফোন দেওয়া হলে তিনি বলেন, আমি এখনো ইউএনও অফিসে আছি এবং একটু ব্যস্ত। পড়ে কথা বলব। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
এর আগে শনিবার (১৩ জুলাই) এ অভিযোগের ব্যাপারে উত্তর যশলদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেছিলেন, আমি ছাত্রীকে স্কুল থেকে বের করে দেইনি। তবে তাকে কয়েকদিন স্কুলে আসতে নিষেধ করেছিলাম। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে স্কুলে আসতে বলেছি।
লৌহজং থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন বলেন, নির্যাতিত শিশুটিকে প্রধান শিক্ষক স্কুল থেকে বের করে দিয়েছেন শুনে আমরা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি জানিয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তিনি।
উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খাঁন বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়া পর ওই প্রধান শিক্ষককে ডেকেছিলাম। ওই শিক্ষকের মৌখিক ব্যাখ্যা সন্তোষজনক নয়। আমরা তাকে শোকজ করেছি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টা প্রক্রিয়াধীন আছে।
এছাড়াও জনপ্রতিনিধি হিসেবে এ বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত না করার দায়ে ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার মো. হারুন অর রশিদকেও শোকজ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত রবিবার ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার ধর্ষক আলাউদ্দিন হাওলাদার (৫৫) ও সালিশকারী খলিলুর রহমান শেখকে আদালতে হাজির করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিবেশীর বাড়িতে যাওয়ার সময় আলাউদ্দিন হাওলাদার ওই শিশুকে আটকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের পর তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ছেড়ে দেয়। ওই শিশু বাসায় এসে তার মাকে সব জানায়। পরে তার মা স্থানীয় মাদবর খলিলুর রহমান শেখ ও করিম ছৈয়ালকে বিষয়টি জানালে তারা আপোষ মীমাংসার কথা বলে ধর্ষণের আলামত নষ্ট করে। কিছুদিন পর তারা বিষয়টি পুলিশ বা অন্য কাউকে জানাতে নিষেধ করে আলাউদ্দিনকে বাঁচানোর জন্য।
পরে গত শুক্রবার বিকালে লৌহজং থানায় তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন নির্যাতিতা শিশুর মা। মামলার একই দিনে দুই আসামি ধর্ষক আলাউদ্দিন হাওলাদার ও আলামত নষ্টকারী খলিলুর রহমান শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার আরেক আসামি করিম ছৈয়াল।
ওডি/এমবি
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড