নওগাঁ প্রতিনিধি
চলতি বর্ষা মৌসুমে হু হু করে বাড়তে শুরু করেছে ছোট যমুনা নদীর পানি। ফলে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে যেতে পারে যেকোনো সময়। আর এতেই চরম আতঙ্কে রয়েছেন নওগাঁর রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলাবাসী। কারণ দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না করায় রাণীনগর উপজেলার ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকার প্রায় ৮কিমি নদীর বেরিবাঁধ চরম ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
রবিবার (১৪ জুলাই) উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ এই ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধ এলাকাটি পরিদর্শন করেন।
নদীর পানি আটকানোর জন্য আশির দশকে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার গোনা ইউনিয়নের ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ী, কৃষ্ণপুর ও আত্রাই উপজেলার ফুলবাড়ি এলাকায় স্থানীয় সরকারের সহায়তায় স্থানীয়রা তৈরি করেন বেরিবাঁধ। এরপর থেকে সরকারের কোন দপ্তর এই বেরিবাঁধের কোন সংস্কার করেনি। কয়েক বছর আগে স্থানীয়রা বাঁশ ও বালির বস্তা দিয়ে কোনমতে রক্ষা করে আসছে এই বাঁধটি। কিন্তু বর্তমানে এই বাঁধের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
নদীতে পানির প্রবাহ তেমন বৃদ্ধির আগেই ভাঙ্গতে শুরু করেছে মাটির বড় বড় চাপ। ভাঙ্গনের ফলে বাঁধের উপর দিয়ে পায়ে হেটে যাওয়ার মতো কোন রাস্তা নেই। যে কোন সময় এই বাঁধ ভেঙ্গে প্লাবিত হতে পারে রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার কয়েকশত গ্রাম আর শত শত বিঘা জমির ফসল। তবুও কোন দপ্তরের নজর নেই বাঁধের দিকে।
নান্দাইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন, গফুর মিয়াসহ অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বর্ষার সময় আমাদের নির্ঘুম রাত কাটে এই বেরিবাঁধটির জন্য। কারণ প্রায় ৩০বছর পার হলেও কোন দপ্তরই এই বাঁধটির বিন্দুমাত্র সংস্কার কাজ করেনি। এমনকি কেউ কোন খবরও নেননি এই বাঁধের বিষয়ে। বাঁধটি যে কোন মুহুর্তে ভেঙ্গে যেতে পারে। এখনই ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। আর বাঁধ ভেঙ্গে গেলে সবার বাড়ি ভেসে যাবে। ভেসে যাবে হাজার হাজার মানুষের ক্ষেত, পুকুরসহ সবকিছুই।
উপজেলার গোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো আবুল হাসনাত খাঁন হাসান বলেন সবচেয়ে দু:খের বিষয় এই বাঁধটি কোন দপ্তরের আওতায় তাই এখনও জানতে পারিনি। এই বাঁধ নাকি কোনো দপ্তরেরই নয়। তাই আমি সংস্কার কাজের আবেদন দেবো কোন দপ্তরে। যোগাযোগ করবো কোন দপ্তরের সঙ্গে। দপ্তরে দপ্তরে ঘুরে ক্ষয় করেছি কয়েক জোড়া জুতা কিন্তু কোন লাভ হয়নি। তাহলে সংস্কার করবে কে?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন ইতিমধ্যেই আমরা বাঁধটি পরিদর্শন করেছি। আমরা চেষ্টা করবো এই সময়ে বাঁধের কোন সংস্কার করা যায় কিনা। বিষয়টি আমি আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন বাঁধটি এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ন কিন্তু বাঁধটি কোন দপ্তরের তা কেউ স্বীকার করছে না। আর এই বাঁধটি সংস্কার করার জন্য অনেক টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন যা আমার পরিষদের একার পক্ষে সরবরাহ করা অসম্ভব। তবে সব দপ্তর মিলে যদি পদক্ষেপ নেওয়া যায় তাহলে এই কাজটি করা সম্ভব। আমরা আমাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করবো বাঁধটি ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য।
নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সংধাংশ কুমার বলেন বাঁধটি আমরা নির্মাণ করিনি। তাই স্বাভাবিক ভাবেই বাঁধটি আমাদের আওতায় পড়ে না। তবুও আমি বাঁধটি পরিদর্শন করার জন্য জনবল পাঠিয়েছি। পরির্দশনের প্রতিবেদন পেলে পরবর্তি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।
ওডি/এসএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড