• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ পঞ্চগড়ের প্রবেশদ্বার

  পঞ্চগড় প্রতিনিধি

১৩ জুলাই ২০১৯, ১৬:২৩
করতোয়া সেতু
পঞ্চগড় শহরে প্রবেশের একমাত্র পথ করতোয়া সেতু (ছবি : দৈনিক অধিকার)

দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড় শহরে প্রবেশের একমাত্র পথ করতোয়া নদীতে নির্মিত সেতুটি দিনদিন যান চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রের মধ্য দিয়ে অধিক যানবাহন চলাচল করায় শহরটিও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে প্রতিনিয়ত। প্রতিদিন তেঁতুলিয়া থেকে সেতুটির ওপর দিয়ে ধারণ ক্ষমতার অধিক মালামাল নিয়ে চলাচল করছে শতশত পণ্যবাহী ট্রাক।

এ দিকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরসহ পঞ্চগড়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ পাথর ও বালুবাহী ট্রাক ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে এই করতোয়া সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল করছে। ১০ চাকার ট্রাকগুলো ৪০ থেকে ৫০ টন পর্যন্ত মালামাল পরিবহন করছে। এতে ক্রমশ সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর থেকে প্রতিদিন পাথরসহ ভারি পণ্য নিয়ে কয়েকশ ট্রাক দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিচ্ছে।

জানা যায়, পঞ্চগড় জেলা শহরের বাইরে দিয়ে একটি বাইপাস সড়ক ও সেতু নির্মাণ করা হোক। যাতে সেই পথ দিয়েই পণ্যবাহী যানবাহনগুলো চলাচল করতে পারে। কখনো কখনো ৪০ থেকে ৫০ টন মালামাল নিয়ে চলাচল করছে যান গুলো। সেতুটির সক্ষমতার বেশি ভারি যান চলাচল করায় সেতুটি ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। সেতুটির প্রতিটি পোল জয়েন্টে ফাঁকার পরিমাণ বাড়ছে।

এ ছাড়া খসে পড়ছে পলেস্তারা, উঠে যাচ্ছে ওয়েরিং কোর্স। কোথায় কোথাও সেতুর রড বেড়িয়ে গেলে বার বার সড়ক বিভাগ থেকে পাথর ও বিটুমিন দিয়ে ঝুঁকি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে সেতুটির বড় ধরণের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির বিভিন্ন পোলের সংযোগস্থলের ফাঁকার পরিমাণ দিনদিন বাড়ছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে ওয়েরিং কোর্স উঠে গেছে। কোথাও কোথাও খসে পড়েছে পলেস্তারা, বেড়িয়ে গেছে রড। কয়েক দিন পরপর সড়ক বিভাগ বেড়িয়ে যাওয়া রডসহ পোলের সংযোগ স্থলে ফাঁকা বন্ধ করতে পাথর ও বিটুমিন দিয়ে তা ঢেকে দেওয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করে আসছে। কিন্তু মেরামতের কয়েক দিনের মাথায় আবার তা উঠে যায়। এভাবেই বার বার ঝুঁকি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা। তাদের অভিযোগ, ওভার লোডিং রোধ ও সেতুটির সংস্কার কাজ না করা হলে চরম ভোগান্তি পোহাতে হবে জেলাবাসীকে।

কলেজ ছাত্র রনি মিয়াজি জানান, প্রতিদিন আমি করতোয়া সেতুর ওপর দিয়ে কলেজে যায়। সেতুর ওপরে রড বেড়িয়ে গেছে। পোলের সংযোগের ফাঁকাগুলো বাড়ছে। কয়েকদিন পরপর দেখি তা পাথর ও বিটুমিন দিয়ে ঢেকে দেয় সড়ক বিভাগের লোকজন। কয়েকদিন চলার পর আবার আগের মতো অবস্থার সৃষ্টি হয়।

মাইক্রোবাস চালক আবু সায়েদ বলেন, বর্তমানে করতোয়া সেতুর ওপরে উঠলেই সেতু কেমন যেন নড়ে উঠে। আগে এমনটা হয়নি। আর ব্যবসায়ীদের চাহিদা মতো আমাদের মালামাল নিতে হয়। আমি কম নিতে চাইলেও তারা তা মানবে না।

তেতুলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি এনামুল হক দৈনিক অধিকারকে বলেন, প্রতিনিয়ত ওভার লোড নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। সবার সহযোগিতা পেলে আমরা শতভাগ ওভার লোড নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো।

পঞ্চগড় সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের উপ সহকারী প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম দৈনিক অধিকারকে বলেন, সম্প্রতি সেতু বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা করতোয়া সেতু পরিদর্শন করেছেন। তারা জানিয়েছেন সেতুটির মূল কাঠামো এখনো ঠিক আছে। তবে উপরের ওয়েরিং কোর্স নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি মেরামত করতে তিন দিন সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। কিন্তু এই সেতুটির ওপর দিয়ে তিন দিন চলাচল বন্ধ রাখা অসম্ভব। তারপরও তারা হয়তো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। তবে আমরা সেতুর কাছেই যানবাহনের ওজন সীমার বিলবোর্ড টানিয়ে দিয়েছি। আমরা বারবার অনুরোধ করছি এই ওজন সীমার বাইরে যেন পণ্য পরিবহণ না করা হয়।

ওডি/এএসএল

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড