• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুকসুদপুরে জরাজীর্ণ স্কুলভবন

‘খোকা, দেখে-শুনে বসিস, মাথায় ভেঙে পড়তে পারে’

  হায়দার হোসেন, গোপালগঞ্জ

১৩ জুলাই ২০১৯, ১২:০৫
জরাজীর্ণ
মুকসুদপুর উপজেলায় জরাজীর্ণ স্কুল ভবন ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার উজানী ইউনিয়নের ডিগ্রীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে প্রায় চার বছর আগে। ইতোমধ্যে ভবনটির একটি অংশ ভেঙে পড়েছে। কিন্তু নতুন ভবন না হওয়ায় ওই পরিত্যক্ত ভবনেই চলছে স্কুলটির কার্যক্রম। ফলে শিক্ষার্থীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ওই জরাজীর্ণ ভবনেই ক্লাস করতে হচ্ছে।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকেরা জানান, উপজেলার ডিগ্রীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাকা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১৫ সালের শুরুতে সেটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এখনো এই ঝুঁকিপূর্ণ দুই কক্ষের ভবনেই চলছে শ্রেণির কার্যক্রম। বিদ্যালয়টিতে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টি শ্রেণিতে ১৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকের পদ চারটি হলেও প্রধান শিক্ষক ডিপি এ্যাড প্রশিক্ষণে থাকায় এখন কর্মরত আছেন তিনজন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিত্যক্ত ভবনের এক অংশ ভেঙে পড়েছে। ওই ভেঙে পড়া ভবনে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদান। ভবনটির অনেক স্থানে পলেস্তারা ধসে পড়ে ফুটো হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি এলে পানি চুইয়ে পড়ে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। পরিত্যক্ত ভবনেই হচ্ছে সমাপনী পরীক্ষার জন্য পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতিমূলক বিশেষ ক্লাস।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী বেলায়েত হোসেন জানায়, আমি বাড়ি থেকে যখন স্কুলে আসি তখন আমার বাবা মা বলে দেয়- খোকা দেখে শুনে বসিস, যেকোনো মুহূর্তে স্কুলটি ভেঙে পড়তে পারে।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদিয়া খানম, জান্নাতী খানম, জুথী খানম বলে, পুরোনো দালানে ক্লাস করতে ভয় লাগে তাদের। তবুও বাধ্য হয়ে পরিত্যক্ত ভবনেই যেতে হচ্ছে।

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান ও আশিকুর মোল্যা বলে, এই বছরের ভেতর সরকার যদি আমাদের স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ না করে দেয়, তা হলে আমরা আর এই স্কুলে পড়ব না। এছাড়া বিদ্যালয়টির বারান্দার ভেতর দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে উপজেলার বাসুদেবপুর থেকে ডিগ্রীকান্দি সড়ক। ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের চরম সমস্যা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লোপা খানম জানান, স্কুলটি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আর ভবনটির বারান্দা রাস্তার ওপর হওয়ায় শিক্ষার্থীসহ আমাদের শিক্ষকদেরও সমস্যা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ করা প্রয়োজন। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হুমায়ন কবির বলেন, ১৯৯৭ সালে নির্মিত পাকা ভবনটিতে প্রথম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। এই ভবনে এভাবে পাঠদান চলতে থাকলে যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণের জন্য পাঁচ বছর ধরে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি।

উপজেলার উজানী ইউপি চেয়ারম্যান শ্যামল কান্তি বোস জানান, ডিগ্রীকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটির যে অবস্থা তাতে যে কোনো মুহূর্তে পুরো ভবনটি ভেঙে পড়ে যেতে পারে। আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও ইঞ্জিনিয়ার অফিসে জানিয়েছি তারা আমাকে আশ্বাস দিয়েছে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন পরিত্যক্ত। ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আমি আশাবাদী অতি জরুরিভাবে ভবনটি পাশ হয়ে যাবে।

ওডি/এফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড