নোয়াখালী প্রতিনিধি
নোয়াখালী জেলা রেকর্ড রুমের ২ লাখ বালাম (জনসাধারণের নামের তালিকা), ১ লাখ ইনডেক্স ও ১ লাখ দলিলসহ চার লাখ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথি-পত্র বিনষ্ট হয়ে গেছে। এ ঘটনায় মাইজদী শহর জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বৃহত্তর নোয়াখালীর মানুষের আমানতের এ রেকর্ড-পত্র বিনষ্ট হয়ে যাওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সরজমিনে গিয়ে রেকর্ড রুমের হাজার হাজার কাগজপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট অবস্থায় পাওয়া যায়। এ সময় কিছু কিছু কর্মচারী র্যাকে থাকা শুকনো রেকর্ডপত্রও পানিতে ফেলে দিয়ে বিনষ্ট করেছেন বলেও স্থানীয় জনগণ অভিযোগ করেছেন।
নোয়াখালী রেকর্ড রুমের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মচারী জানান, নোয়াখালী রেকর্ড রুমে গত কয়েকদিনে অন্তত ২ লাখ বালাম, ১ লাখ ইনডেক্স, ১ লাখ দলিলসহ মূল্যবান কাগজপত্র বিনষ্ট হয়ে গেছে।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু ইউছুফ জানান, রেকর্ড রুমের কাগজপত্র, বালাম ও সরকারি রেকর্ড-পত্র বিনষ্ট হয়েছে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে রেকর্ড রুমে পাঠান। ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্টে ঘটনার সত্যতা পেয়ে জেলা প্রশাসক জেলা রেজিস্টারকে ডেকে নিয়ে এ ব্যাপারে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বললেও জেলা রেজিস্টার আশ্রাফুল ইসলাম রেকর্ড রুম পরিদর্শনে যাননি।
বিকাল ৪টা থেকে জেলা রেজিস্ট্রারকে অফিসে না পেয়ে তাকে ফোন করলেও তিনি রিসিভ না করায় রেকর্ডপত্র বিনষ্ট হওয়ার কারণ জানা যায়নি।
রেকর্ড রুমের রেকর্ড কিপার নারায়ণ চন্দ্র দাস বলেন, তিনি নবাগত তাই বিনষ্ট রেকর্ড পত্রের পরিমাণ তথ্য তার জানা নেই।
সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের হেডক্লার্ক সিরাজুদ্দৌলাকে একাধিকবার স্থানীয়রা জেলা রেজিস্ট্রারকে বর্ষা মৌসুম উপলক্ষে জরুরি কাগজপত্র অন্যত্র সরাতে গুদাম ভাড়া নেওয়ার জন্য একাধিকবার বলা হলেও কেউ কর্ণপাত করেনি।
দলিল লেখক সমিতি সভাপতি সাইফ উদ্দিন বাবুল জানান, পানি ওঠার কারণে বালাম ও কপিগুলো ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে। জেলা রেজিস্ট্রার মহোদয়ের বাহিরে আমরা কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
বাংলাদেশ এক্সট্রা মোহরার অ্যাসোসিয়েশন সদর শাখার সেক্রেটারি কাজী জানিয়াত হোসেন মেহেল জানান, পুরাতন বালাম ইনডেক্স গত বছর ও বর্তমান বছরের দলিল ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, টেবিল, চেয়ার নষ্ট হয়ে গেছে। বেহাল দশায় কয়েকশ কর্মচারী কাজ করতে পারছেন না।
জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সেক্রেটারি ও আওয়ামী আইনজীবী সমিতির নেতা অ্যাডভোকেট আবদুল মান্নান জানান, রেকর্ড-পত্র নষ্ট হলে এক শ্রেণির জালিয়াত চক্র অফিসের যোগসাজশে জাল দলিল ও রেকর্ড-পত্র তৈরি করে সাধারণ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে ফেলবে। যার ফলে জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে এবং মামলা মোকদ্দমা বৃদ্ধি পাবে।
ওডি/ এফইউ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড