• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিলুপ্তির পথে খড়ের ঘর

সেকালে এ ঘরই ছিল গরিবের ‘এসি’

  এইচ এম কাওসার, বরগুনা

০৭ জুলাই ২০১৯, ২১:৪৮
খড়ের ঘর
হারিয়ে যাচ্ছে খড়ের ঘর (ছবি- দৈনিক অধিকার)

গ্রামের খড়ের ঘর এখন আর তেমন দেখা যায় না। মাটির দেয়াল, ওপরে খড়ের চাল। সামনে বড় উঠোন। ঘরের পেছনের দিকে ছোট্ট পুকুর। চারপাশে গাছ-গাছালিতে ভরপুর। এক সময় এমন মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ত বরগুনা জেলার প্রতিটি গ্রামাঞ্চলে। এখন আর আগের মতো চোখে পড়ে না গ্রামের খড়ের ঘর।

সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, বরগুনা জেলায় ৬ উপজেলায় ৯০ এর দশকে প্রতিটি বাড়িতে একটি করে হলেও খড়ের ঘর চোখে পড়ত। প্রায় প্রতিটি গ্রামেরই ছোট খড়ের ঘরগুলো ও ঘরের পরিবেশ সবার নজর কাড়ত। এ যেন এক রাজ্য। ঝড়, বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি তীব্র গরম ও শীত থেকে বাঁচতেও এই ঘরের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু কালের বিবর্তনে দালানকোঠা আর অট্টালিকার কাছে হার মেনেছে চিরচেনা মাটির ঘর।

খড়ের ঘর নিয়ে আলাপকালে দৈনিক অধিকারকে বেতাগী উপজেলার সদ্য গ্রামের শিক্ষক মোজাম্মেল হক রিপন বলেন, বর্তমান প্রজন্মের ধনী কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্যরা পূর্ব পুরুষদের ঐতিহ্য বহনকারী মাটির ঘর ভেঙে লোহা, সিমেন্টের বিলাসবহুল বাড়ি বানানোর দিকে ঝুঁকেই চলেছেন। ততটা সামর্থ্য না থাকলে টিনের বেড়া আর টিনের চালা দিয়েও বানানো হচ্ছে ঝকঝকে সুন্দর ঘরবাড়ি। আর তাতেই নাকি তাদের সম্মান আর শান্তির বসবাস।

খড়-মাটির ঘরেই মিলতো গরিবের শান্তি। বর্তমানে হারিয়ে যাচ্ছে খড়ের ঘর (ছবি- দৈনিক অধিকার)

আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হতদরিদ্র ফাতেমা বেগম (৫০) বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ মাটির ঘরে বসবাস করে আসছে। মাটির সহজলভ্যতা, প্রয়োজনীয় উপকরণ আর শ্রমিক খরচ কম হওয়ায় আমাদের দিনে মানুষ মাটির ঘর, খড়ের ঘর বানাতে বেশ আগ্রহী ছিল। এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হতো। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়ের ছাউনি দেওয়া হতো। মাটির দেয়ালের চারপাশ ঘিরে গ্রামের সৌখিন গৃহিণীরা মাটির দেয়ালে খাটুনি দিয়ে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে তাদের নিজ বসত ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন। এটা ও এক ধরনের আনন্দ ছিল আমাদের মাঝে।

তালতলী উপজেলার খড়ের ঘরের কারিগর আব্দুল মজিদ বলেন, এসব খড়ের ঘর তৈরি করতে আমাদের সময় লাগত কয়েক দিন। স্বল্প খরচে তৈরি করা হতো এসব ঘর। এই আধুনিকতার দিনে খড়ের তৈরি এসব ঘর এখন আর চোখে পড়ে না। এই ঘরগুলো গরমে থাকার জন্য বেশ আরামদায়ক গরমের দিনে শীতল থাকে খড়ের ঘরগুলো। তাই এই ঘরকে গরিবের এসিও বলা হয়ে থাকে। তবে এখন আর তেমন চোখে পড়ে না খড়ের ঘর।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড