• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

লাখ টাকা চাঁদা দিয়েও রক্ষা পাচ্ছেন না শিক্ষিকা

  গাজীপুর প্রতিনিধি

০৬ জুলাই ২০১৯, ১৮:৪৫
মো. আলম শেখ
মামলার প্রধান আসামি মো. আলম শেখ (ছবি : সংগৃহীত)

চাকরি বাঁচাতে বাধ্য হয়ে মাদ্রাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে ১ লাখ টাকা চাঁদা (ঘুষ) দিয়েছেন এক শিক্ষিকা। কিন্তু এতে মন ভরেনি সভাপতির; চেয়েছেন আরও ২ লাখ। ওই শিক্ষিকা আর্থিক অসচ্ছলতার কথা জানিয়ে আরও ২ লাখ টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর থেকে শিক্ষিকাকে মাদ্রাসায় প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না সভাপতি ও তার সহযোগীরা।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চিনাশুখানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটেছে। মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলম শেখ। ভুক্তভোগী শিক্ষিকা তানজিলা খাতুন। তিনি প্রতিষ্ঠানের সহকারী মৌলভী শিক্ষিকা।

অবৈধভাবে ১ লাখ টাকা চাঁদা নেওয়ার অভিযোগে আলম শেখসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তানজিলা খাতুন। গাজীপুরের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দায়ের মামলাটি (নম্বর ২১৭/২০১৯) তদন্তের দায়িত্বে রয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

মামলার প্রধান আসামি আলম শেখ চিনাশুখানিয়া গ্রামের মো. ইসমাইল শেখের ছেলে ও রাজাবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। বাকি তিন আসামি হলেন- কাপাসিয়া থানার চাঁদপুর ইউনিয়নের নলগাঁও গ্রামের মৃত আকমত আলীর ছেলে মো. মুছা কাজী, শ্রীপুর উপজেলার চিনাশুখানিয়া গ্রামের মো. আহসান উদ্দিন দেওয়ানের ছেলে মো. আমান উল্লাহ দেওয়ান ও একই গ্রামের আফতাব হোসেনের স্ত্রী ওই মাদ্রাসার শিক্ষিকা উম্মে কুলুম।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালে ১০ অক্টোবর ও চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি এ দুইদিন চিনাশুখানিয়া দাখিল মাদ্রাসার অফিস কক্ষে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলম শেখ ও মামলার অন্য আসামিরা তাকে চাঁদা (ঘুষ) দিতে বাধ্য করেন। অন্যথায় নানাভাবে হয়রানি ও হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন বলে উল্লেখ করেন ওই শিক্ষিকা। এ ঘটনায় মামলার সাক্ষী হিসেবে সদ্য অবসরে যাওয়া ওই মাদ্রাসার সুপার রুহুল আমিন ভূঁইয়াসহ সাতজন রয়েছেন।

মামলার বিবরণী (ছবি : অধিকার)

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা তানজিলা খাতুন মামলার বিবরণে আরও উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে ১লা সেপ্টেম্বর শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকেই তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। তাকে নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও মামলার অন্য আসামিরা। অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে চাকরি টেকাতে বাধ্য হয়ে ওই বছরের ১০ অক্টোবর তাদের ১ লাখ টাকা চাঁদা দেন তিনি।

ঘটনাটি ওখানেই শেষ হলে রেহায় পেতেন শিক্ষিকা তানজিলা। চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসার অফিস কক্ষে একই কায়দায় তানজিলার কাছে আবারও ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। অপারগতা প্রকাশ করায় তাকে মাদ্রাসায় ক্লাস নিতে দেওয়া হয়নি বলেও উল্লেখ করা হয় মামলায়।

এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠানটির অন্য শিক্ষকরা জানান, মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আলম শেখসহ মামলার অন্য আসামিদের নানা হুমকি-ধামকির মুখে এখন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা মাদ্রাসায় ক্লাস করাতে পারছেন না। ১ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েও নানা বাধার মুখে তিনি মাদ্রাসায় প্রবেশ করতে পারছেন না।

মামলার প্রধান আসামি ও মাদ্রাসার সভাপতি আলম শেখ বলেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। মামলার রায় যা হয় আমি মেনে নেব।

একজন শিক্ষককে মাদ্রাসায় প্রবেশ করতে না দেওয়ার ক্ষমতা তাদের কে দিয়েছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষিকা তানজিলা খাতুন বলেন, আমার কাছে থেকে জোরপূর্বক ১ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়া হয়েছে। আসামিরা আরও ২ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেছেন। কিন্তু আমি না দেওয়ায় আমাকে মাদ্রাসায় যেতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে একটি মামালা হয়েছে। আমি ন্যায় বিচার চাচ্ছি।

ওডি/এমআর

আরও পড়ুন

১শ টাকায় সুখ বিক্রি, অতিষ্ঠ পথচারীরা

ছেলের জন্য ৪৪ বছর রোজা রাখা সেই মা আর নেই

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড