কলারোয়া প্রতিনিধি, সাতক্ষীরা
ভোরবেলা আযানের সুর শুনে ঘুম ভাঙে সরদার আমিনদ্দীনের। ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায়ের পরপরই বেরিয়ে পড়েন তাল গাছে উঠার উদ্দেশ্যে। সাতসকালে তাল গাছে ওঠার উদ্দেশ্য একটাই, তালের রস সংগ্রহ করা। প্রতিটি তাল গাছের মাথায় মৌচার সঙ্গে নেট জাল দিয়ে বেঁধে মাটির হাঁড়ি পেতে রাখে। হাঁড়িতে রস জমা হলে তা বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে।
দুই যুগ ধরে তালের রস সংগ্রহ করে বাজারজাত করেন গাছি সরদার আমিনদ্দীন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা ইউনিয়নের দিগং গ্রামের সন্তোষ বিশ্বাসের ছেলে তিনি।
চৈত্র মাসের শুরু থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত দিনে তিনবার সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় তাল গাছের রস সংগ্রহ করেন ওই গাছি। গাছি তালের মৌচা কেটে মুখে একটা হাঁড়ি বসিয়ে দেন। তবে হাঁড়ি বসানোর সময় হাঁড়িতে কয়েক ফোটা চুন দিয়ে থাকেন যাতে রস পরিষ্কার থাকে। জটা তাল গাছ ও যে গাছে তাল ধরে উভয় প্রকার তাল গাছ থেকেই রস সংগ্রহ করেন তিনি। গরমের সময় খেজুরের রসের বিকল্প হিসেবে তাল গাছের রস প্রাণ জুড়ায়। পিঠাসহ নানা মিষ্টান্ন খাবারে এই রস ব্যবহার করা যায়। এ রস শুধু পানীয় কিংবা পিঠা বানাতে কাজে লাগে তা নয়, সুস্বাদু এ রস দিয়ে পিঠা, গুড়, মিছরিসহ নানা ধরনের মিঠাই তৈরি করা হয়।
গাছি আমিনদ্দীন দৈনিক অধিকারকে বলেন, ঔষধি গুণাগুণ আর স্বাদে ভরপুর তালের রস। কিন্তু যেভাবে তাল গাছ হারিয়ে যাচ্ছে তাতে কয়েক বছরপর তাল রস পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ। তিনটি গাছ থেকে রস সংগ্রহ করি। দুই যুগের ও বেশি সময় তালের মৌসুমে সারাদিন গাছে চড়ে তালের রস পেড়ে বিক্রয়ে ব্যস্ত সময় পার করি। তালের রস সংগ্রহ করে প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার টাকাও রোজগার হয়। এক গ্লাস তালের রস ১০ টাকায় বিক্রি করি। প্রতি মৌসুমে ৮০ থেকে ৯০ হাজার একটু পরিশ্রম করলেই আয় হয়। বিশেষ করে গরমকালে তালের রসের চাহিদা প্রচুর।
ওডি/এসজেএ
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড