• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ডাক্তার সঙ্কটে খুঁড়িয়ে চলছে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল

  চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

০৪ জুলাই ২০১৯, ১৯:২৩
সদর হাসপাতাল
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল (ছবি- দৈনিক অধিকার)

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডেপুটেশনের ডাক্তার দিয়ে কোনো রকমে চালানো হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। ২১ জনের জায়গায় ১৫ জন ডাক্তার দিচ্ছেন রোগীদের চিকিৎসা। রোগীর চাপ সামাল দিতে ডেপুটেশনে ডাক্তার এনে চালানো হচ্ছে হাসপাতালটি। হাসপাতালটি ১শ শয্যার হলেও সেই পুরোনো ৫০ শয্যার জনবল দিয়ে দেওয়া হচ্ছে সেবা।

জানা গেছে, ১৯৭০ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হয়। সে সময় জনসংখ্যা কম থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে বেগ পেতে হয়নি এ হাসপাতালটির। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জনসংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাওয়ায় পাল্লা দিয়ে বেড়েছে রোগীর সংখ্যাও। ২০০৩ সালে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নিত করা হয়। তবে ডাক্তার ও নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তাই ১০০ শয্যার হাসপাতালটি আজও ৫০ শয্যার জনবলেই চলছে।

২০১০ সালের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালকে ২৫০ শয্যা হাসপাতালে উন্নিতকরণের জন্য ১৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় জনবল সঙ্কট নিয়েই নতুন ভবনসহ ২৫০ শয্যার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাসিম।

এ দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা ও পরিচ্ছন্নতার দিক দিয়ে খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সরকারি হাসপাতালের মধ্যে প্রথম এবং সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে অর্জন করেছে তৃতীয় স্থান। যে কারণে হাসপাতালে প্রতিনিয়তই বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। বহির্বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা ৮শ-এর অধিক এবং সার্বক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩শ-এর অধিক। ৫০ শয্যার ডাক্তার দিয়ে এত বেশি রোগীর সুচিকিৎসা প্রদান করতে ডাক্তাররা যেন হিমশিম খাচ্ছেন।

হাসপাতালে একাধিক রোগী ও তার স্বজনেরা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বেড না থাকায় হাসপাতালের মেঝে, সিঁড়ির পাশে ও টয়লেটের পাশে বিছানা পেতে থাকতে হয় রোগীদের। হাসপাতালের বারান্দাতেও গায়ের সঙ্গে গা ঘেষে থাকতে হচ্ছে তাদের।

হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে কর্তব্যরত সিনিয়র স্টাফ নার্স রোমানা সুলতানা জানান, ওয়ার্ডে যত রোগী থাকার কথা, তার থেকে চার-পাঁচ গুণ রোগী বেশি থাকায় আমাদের চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ওয়ার্ডের মেঝেতেও রোগীতে পূর্ণ। এক রোগীকে সেবা দিয়ে অন্য রোগীর কাছে পৌঁছাতে বেগ পেতে হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. শামীম কবির জানান, চুয়াডাঙ্গার জেলাবাসীর উন্নত চিকিৎসার একমাত্র ভরসা এই চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল। প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৭ থেকে ৮শ-এর বেশি রোগী চিকিৎসা নিতে আসে এবং ১৫০ থেকে ২০০ রোগী এ হাসপাতালে ভর্তি হয়। যার কারণে এ বিপুলসংখ্যক রোগীর চিকিৎসাসেবা প্রদান এবং জায়গা দেওয়া ১০০ শয্যার ভবনে আর সম্ভব হচ্ছে না। তা ছাড়া ৫০ শয্যার ডাক্তার দিয়ে এত বেশি রোগীর সুচিকিৎসা প্রদান করতে ডাক্তারদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সিভিল সার্জন ডা. খায়রুল আলম জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল এখনো ৫০ শয্যা হাসপাতাল হিসেবেই ব্যবহার করা হচ্ছে। ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল রূপে সেবা প্রদান করা হলেও এটি এখনো ১০০ শয্যায় উন্নিত হয়নি। চেষ্টা করছি, হয়তো অচিরেই ১০০ শয্যার অনুমতি পাব। ১০০ শয্যার অনুমতি না পেলে ২৫০ শয্যার অনুমতিও পাওয়া যাবে না।

ওডি/এসএ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড