• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাঘাইছড়িতে একই প্রকল্পে পৃথক নামে বরাদ্দ, কোটি টাকা লোপাট

  এম.কামাল উদ্দিন, রাঙ্গামটি

২৮ জুন ২০১৯, ১০:৪৫
খাল খনন
বাঘাইছড়ির বারবিন্দু ঘাটের খাল খনন প্রকল্প ( ছবি : দৈনিক অধিকার)

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে খাল খনন প্রকল্পে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরের মারিশ্যা ইউনিয়নের বারবিন্দু ঘাটে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এতে একই জায়গায় পৃথক নামে দুই দফায় দুই প্রকল্প বাস্তবায়ন দেখানো হয়েছে। পৃথক দুই নামে প্রকল্পে প্রত্যেকটিতে এক কোটি টাকা করে ব্যয় বরাদ্দ দেখানো হলেও কাজ করা হয়েছে একটিই। এতে লোপাট হয়েছে সরকারের এক কোটি টাকা। যা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের যোগসাজশে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঘাইছড়ি উপজেলার মারিশ্যা ইউনিয়নের বারবিন্দু এলাকায় প্রথম দফায় ২০১৭-১৮ বারবিন্দু ঘাটে নদী ভাঙন রোধ ও সড়ক নির্মাণ নামে এক কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। কাজ পায় অমেলেন্দু চাকমা নামে স্থানীয় এক ঠিকাদার। এতে কিছু কাজ করে ৫৫ লাখ টাকার বিল উত্তোলন করেন ঠিকাদার।

তখন কাজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন- জেলা পরিষদের উপসহকারী প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় চাকমা। কিন্তু পরে যেটুকু কাজ হয়েছে, তার অনেকাংশ বন্যার পানিতে ভেস্তে গেছে। ফলে বাকি ৪৫ লাখ টাকার চূড়ান্ত বিলে স্বাক্ষর দেননি জেলা পরিষদের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ।

এ নিয়ে পরিষদের মধ্যে গণ্ডগোলও বাঁধে। এর এক পর্যায়ে অন্যত্র বদলি হয়ে গেছেন, নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী আবদুস সামাদ। তৎকালীন কাজে তদারককারী উপসহকারী প্রকৌশলী জ্যোতির্ময় চাকমাও এই মধ্যে পাশের জেলা বান্দরবানের থানচিতে বদলি হয়ে গেছেন বলে জানা যায়। এসব কারণে ওই অর্থবছর শেষে কাজের চূড়ান্ত বিল উত্তোলন করতে পারেননি ঠিকাদার। ফলে যেটুকু কাজ হয়েছিল, সেই টুকুতেই অসমাপ্ত রয়ে যায় প্রকল্পটি। আর কাজ নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা।

সূত্র জানায়, জটিলতা এড়াতে পরবর্তী ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ওই একই প্রকল্পে ভিন্ন নাম বারবিন্দু ঘাটে খাল খনন ও রাস্তা সংস্কার উল্লেখ করে আবার এক কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ। আর কাজ দেওয়া হয়, অমেলেন্দু চাকমা নামে ওই একই ঠিকাদার। তবে এবার প্রকল্পে কাজের তদারকির দায়িত্বে ছিলেন- জেলা পরিষদের বর্তমান উপসহকারী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কান্তি চাকমাকে। কিন্তু ভিন্ন নামে হলেও আবার একই জায়গায় সাদামাটা কিছুটা কাজ করা হয়েছে ওই আগের প্রকল্পে। এরই মধ্যে প্রকল্পটির কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে বিলের সব টাকা পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় অনেকের অভিযোগ, ওই প্রকল্পে অযথা দুই কোটি টাকা ব্যয় দেখানো হলেও দৃশ্যমান কাজ তেমন কিছুই হয়নি। প্রকল্পে দুই দফা কাজে সব মিলিয়ে বেশি জোর ২০-৩০ লাখ টাকার কাজ হয়েছে কি না, তাও সন্দেহ রয়েছে। বাকি টাকা লোপাট হয়ে গেছে বলে মন্তব্য, স্থানীয়দের। তারা বলেন, সুষ্ঠু তদন্তে প্রকৃত বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে কাজের তদারককারী উপসহকারী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কান্তি চাকমা বলেন, আগে কী হয়েছে- তা আমার জানা নেই। এবার প্রকল্পে সিডিউল মোতাবেক ঠিকভাবে কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। খনন করা খাল দিয়ে এখন নৌকা চলছে। কাজ এরই মধ্যে সমাপ্ত হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অমেলেন্দু চাকমাকে ফোনে খোঁজ পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী ক্য হলা খই কে মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ওডি/এসএএফইউ

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড